রূপনারাণের কূলে কবিতার ভাববস্তু আলোচনা করো | দ্বাদশ শ্রেনি Note With PDF | ClassGhar |

 
রূপনারাণের কূলে কবিতার ভাববস্তু আলোচনা করো

“রূপনারাণের কূলে” কবিতার
ভাববস্তু:

 “শেষ লেখা” কাব্যের 11 সংখ্যক “রূপনারানের
কূলে” কবিতাটিতে জীবনের প্রান্তসীমায় উপনীত রবি কবির জগত ও জীবন সম্পর্কে সুগভীর
বোধ এবং সুতীব্র মর্ত্যপ্রীতির
 
অস্তরাগ ছড়িয়ে পড়েছে। স্বপ্ন ও কল্পনার মায়া আবরণ কে দূরে সরিয়ে রবীন্দ্রনাথ এখানে
যে জীবনকে দেখেছেন তা আঘাত ও সংঘাতময়। দুঃখ- যন্ত্রণা, হতাশা ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মধ্য
দিয়েই জীবনের যথার্থ পরিচয় পাওয়া যায়। কল্পনার কোমল ভূমিতে মধুরতা দিতে পারে স্বপ্ন।
আবেশে দুলিয়ে দিতে পারে মন। দিতে পারে সব পেয়েছির দেশের সন্ধান।হয়তো
  দিতে পারে রূপকথার সোনার কাঠির ছোঁয়া। কিন্তু সে তো
ক্ষণিক এবং মিথ্যা। স্বপ্নভঙ্গের প্রথম মুহুর্ত যে কি ভীষণ ভয়াবহ হয়ে ওঠে তা আমাদের
অজানা নয়।
           

                            কিন্তু কবির মতে জীবনের পথ ফুল বিছানো নয় বরং তা কাটায়
আকীর্ণ। সেই কাঁটা মাড়িয়ে জীবনের সত্যকে সঞ্চয় করে নিতে হয়। তা কঠিন এবং কষ্টকর হলেও
বঞ্চনার বস্তু নয়। কবির
 
অনুভূতিতে- “সত্য কঠিন। অনেক দুঃখ, দাবি নিয়ে আসে। স্বপ্নে তা তো থাকেনা। কিন্তু
তবুও আমরা সেই কঠিন কেই ভালবাসি
। (রানিচন্দ কে বলা কথায়) কারণ তা আমাদের ঠকায়
না। বাস্তবের এক সুতোয় বাধা-

          “সে কখনো করে না বঞ্চনা”।

কবি ও স্বপ্নময়তা থেকে ফিরেছেন বাস্তব চেতনালোকে। কারণ
সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ানোর মধ্য দিয়েই মানবজীবন সার্থকতা পায়। জীবন হয়ে ওঠে কর্মময়
ও গতি মুখর। সুখ-বিলাস বৈভবে মত্ত থেকে জীবনের প্রকৃত স্বরূপ কে জানা যায় না। সত্যের
মধ্যেই আছে কোমল, কঠোর সবকিছুই। সাহস ভরে তাকে বরণ করে নিতে হবে। দুঃসহ তপস্যার মধ্যে
দিয়ে সত্যের দারুন মূল্য লাভ করা যায়।

            এ জগত এবং জীবনের কাছে মানবসমাজ চিরঋণী কারণ তার কাছে
থেকে দিয়েছি যা নিয়েছি তার বেশি। জগৎ ও জীবনের কাছে যেমন আমাদের প্রত্যাশা আছে তেমনি
চেতনাসমৃদ্ধ মানবের কাছে জীবনের প্রত্যাশা ও
 
দাবি আছে। দুঃসহকে
  সহ্য করে, কঠিন কে ভালবেসে,
মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জগৎ ও জীবনের সকল দাবী শোধ করে দিতে হয়। কবির সুদীর্ঘ
  জীবনলব্ধ 
এই চরম অভিজ্ঞতাই প্রকাশ পেয়েছে। কবিতাটি ও সার্থক হয়ে উঠেছে।


Download Pdf

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *