“আমি তা পারিনা”- কেন পারেন না? কে কী পারেন না? তবে তিনি কি পারেন? Class 12 bengali Note PDF | ClassGhar |

“আমি তা পারিনা”- কেন পারেন না?

      “Art
for social sake” মতবাদে বিশ্বাসী কবি মৃদুল দাশগুপ্তের “ক্রন্দনরতা জননীর
পাশে”কবিতাটি সামাজিক দায়বদ্ধতার বিবেকবাণী,মনুষ্যত্ববোধের উজ্জীবন মন্ত্র।

      মানুষ
সমাজবদ্ধ জীব। দেশের জল হাওয়ায় আর দেশ মায়ের স্নেহের আঁচল ছায়ায় লালিত-পালিত।
কিন্তু হায় আমরা! যে সমাজ দিয়েছে সাহস, ভরসা, বিশ্বাস তার প্রতি আমরা কৃতঘ্ন। যেমাটির
লাবণ্য আর সবুজ শস্যের স্তন্য পান করে মানুষ পেয়েছে শক্তি আর সৌন্দর্য, ভুলেছে সেই
দেশ জননীকে। স্বার্থের ঠুলি তার স্বচ্ছ দৃষ্টিকে আবৃত করেছে। সমাজজীবনে তাই দিন দিন
নেমে আসছে অমানিশার অন্ধকার। হারিয়ে যাচ্ছে সমষ্টি ভাবনা, স্বদেশপ্রেম আর ভাতৃত্ববোধ।
“আমার টুকু হলেই হল”- এই অপচেতনা সামাজিক দায়বদ্ধতা কি লেহন করছে প্রতিনিয়ত।
নিঃশেষ করছে।এমন অক্ষয়ের যুগেও মেঘের ঘনঘটা মাঝে জেগে থাকা দু’একটি তারার মতো একটি
অন্তহীন নির্নিমেষ চোখ চেয়ে থাকে সমাজের দিকে। কবি তাদেরই একজন। তিনি আর পাঁচটা মানুষের
মতো অন্যায় দেখে আত্মমগ্ন থাকতে পারেননি। তার
  কল্যাণময় দুর্নিবার বিবেক বারবার আঘাত করেছে তার চেতনাকে।
জাগিয়ে তুলেছে তার ভাতৃত্ববোধ ও দায়বদ্ধতাকে। তার মনে হয়েছে জীবনের শেষ ক্ষণটুকু
উজাড় করে দিতে হবে সমাজের জন্য, মানুষের জন্য।ন্যায় প্রতিষ্ঠায় নিয়োগ করতে হবে
সকল কর্মকে। সাহিত্য একটি শিল্প। কবি ভোলেননি
  এই সমাজের প্রতি সেই শিল্পের দায়বদ্ধতাকেও। তাই নিষ্ঠুর
শাসনে নিহত ভাইয়ের শবদেহ বা মানুষ- পশুর দাত নখে বিক্ষত দেহ দেখে তিনি অদৃষ্টের উপর
নির্ভর করে নীরব থাকতে পারেন না। জননীর কান্না তার অন্তরকে সিক্ত করে। ভাই বোনের জমাট
বাঁধা রক্ত তার হৃদয়কে রক্তাক্ত করে। সেই যন্ত্রণা আর ক্রোধ থেকেই ভূমিষ্ঠ হয় প্রতিবাদ।
কবির হাতিয়ার তার কলম। সেই আঁচড়ে- অক্ষরে- রেখায় জ্বলে ওঠে
  স্ফুলিঙ্গ।তা না হলে কবির কাছে যে লেখা ,গান ,আঁকা,
ভালোবাসা, মূল্যবোধ মিথ্যা। তাই কবিতায় জাগে তার বিবেক বিস্ফোরণ উন্মুখ বারুদের মতো।কবি
পারেননা আত্মশক্তিকে বিসর্জন দিয়ে নীরবে বিধির বিচার চেয়ে বসে থাকতে। প্রতিবাদী হন।আর
সাথে সাথে শিল্পের দায়বদ্ধতা ও সার্থকতা পায়। এসব মানসিক ক্রিয়া -প্রতিক্রিয়ার
জন্য কবি তা পারেন না।

        কবি
মৃদুল দাশগুপ্ত ব্যক্তি তথা স্বদেশ জননীকে ক্রন্দনরতা দেখে, নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে
কিংবা জঙ্গলেই নিখোঁজ নারীর ছিন্নভিন্ন শরীর দেখে এই নৃশংসতাকে সহ্য করে বিধির বিচার
চেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেন না।

               অবক্ষয়িত সমাজের মর্মমূলে জমে থাকা অন্যায়, অত্যাচার
অনৈতিকতা ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে গণজাগরণ ঘটানোর জন্য বিস্ফোরণ উন্মুখ বারুদের মত তার
বিবেককে কবিতায় জাগিয়ে তুলতে পারেন। রক্ষা করতে পারেন সামাজিক তথা শিল্পের দায়বদ্ধতা।

 

Download Pdf

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top