“কলকাতার ইটের পাঁজরে লুকিয়ে আছে ভালবাসার ঝরনা”- একথা বলার কারণ কি? কলের কলকাতা | দ্বাদশ শ্রেণি নোটস PDF | Class Ghar |

কলের কলকাতা কলকাতার ইটের পাঁজরে লুকিয়ে আছে ভালবাসার ঝরনা”
একথা বলার কারণ কি? 
অথবা, কিভাবে সেই ভালবাসার ঝর্নার প্রকাশ ঘটেছে? অথবা, এ শহরকে তিনি ভালোবেসে
ফেলেছেন কেন? 
দ্বাদশ শ্রেণি বাংলা নোটস PDF | PDF Download link নিচে দেওয়া আছে |

কলকাতার ইটের পাঁজরে লুকিয়ে আছে ভালবাসার ঝরনা- একথা বলার কারণ কি?

 কলের কলকাতা

          গ্রাম গঞ্জের চলমান জীবনের উত্তাপ লেগে আছে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের
“আমার বাংলা” গ্রন্থের বিভিন্ন রচনায়। কলের কলকাতা রচনায় কলকাতার
নানা সমস্যা এবং আন্দোলনের পাশাপাশি তিনি কলকাতার মানুষের অন্তর্লীন
  ভালোবাসাকেও বাণীবদ্ধ  করেছেন।

             ছোটবেলায় লেখক যখন প্রথম কলকাতায় আসেন সেই প্রথম
দর্শনে কলকাতাকে তার ভাল লাগেনি। অনেকের মতো তারও মনে হয়েছিল এই শহরের বাড়ি গুলো
যেন প্যাকিং বাক্সের স্তূপ।আলো জ্বলা রাস্তাগুলো যেন সুড়ঙ্গ।মানুষগুলো যেন গোমরামুখো
দম দেওয়া কলের পুতুল। শহরটা যেন কংক্রিটের জঙ্গল। এই ব্যস্ত শহর কে তার পছন্দ হয়নি।
কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে শহরের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়েছে ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর। তিনি
উপলব্ধি করেছেন এ শহরকে। এ শহরের মানুষ এবং তাদের হৃদয়কে। তিনি উপলব্ধি করেছেন এ শহরের
প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে। এই শহর একদিকে যেমন কর্মচঞ্চল, অন্যদিকে এ শহর
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও করতে জানে। অপরের দুঃখ কষ্টে পাশে দাঁড়াতে পারে। এ
শহর দেশ এবং মানুষের কল্যাণে নিজের জীবন তুচ্ছ করে এগিয়ে যেতে জানে। তার অন্তরে চির
উজ্জ্বল হয়ে থাকে এই নির্মল ভালোবাসা। আপাতদৃষ্টিতে তাই যে শহরকে ইট-কাঠ-পাথরের নিষ্প্রাণ
বস্তু বলে মনে হয় তারই ইটের পাঁজরে অন্তঃসলিলা ফল্গুধারার মত লুকিয়ে আছে ভালবাসার
ঝর্ণা। লুকিয়ে আছে হৃদয়। তাই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ ও পা মেলায় মিছিলে। শিশুরাও
বুলেটবিদ্ধ হতে ভয় পায়না। খদ্দরের টুপি তাদেরকে গর্বিত করে। অকুণ্ঠ আত্মদানের ইচ্ছায়
নিশ্চিত মৃত্যুর সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায় ছাত্ররা।
  ঘুঁচে 
যায় জাতি-ধর্ম-বর্ণ, অর্থনৈতিক ব্যবধান।

          শহীদ
কদম রসুল এর কাচ্চা- বাচ্চাদের বাঁচানোর জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।মাঝে মাঝে প্রচন্ড রাগে
ফেটে পড়ে সেই ভালোবাসা। কলকাতার ইংরেজ সৃষ্ট জাল ইতিহাসকে মাটিতে মিশিয়ে দেয় আন্দোলনের
জোয়ারে।

             তাই লেখকের মনে হয় কলকাতা নিষ্প্রাণ নয়। তার অন্তরে
রয়েছে অফুরন্ত ভালোবাসা। তার কংক্রিটের মাঝেও ধুক পুক
  করে ওঠে হৃদপিণ্ড।যতদিন এ শহর আর শহরের মানুষ আছে ততদিন
এ ভালোবাসার ঝরনা
  উৎসারিত হয়ে উঠবে শতধারায়।
এভাবেই লেখক কলকাতার বুকে ভালবাসার ঝরনা ধরতে দেখেছেন এবং অপূর্ব মমতায় একদিন ভালোবেসে
ফেলেছেন এই শহরকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *