কুন্তী ও দ্রৌপদী সম্পর্কে জনার অভিযোগ কি ছিল? “নীলধ্বজের প্রতি জনা” |


কুন্তী ও দ্রৌপদী সম্পর্কে জনার অভিযোগ

অশ্বমেধের যজ্ঞাশ্ব ধরলে অর্জুনের সঙ্গে মাহেশ্বরী পুরীর রাজকুমার প্রবীরের
যুদ্ধ হয়। প্রবীর নিহত হন। কিন্তু নীলধ্বজ পুত্রহন্তার
  বিরুদ্ধে প্রতিশোধ না নিয়ে তাঁকে মিত্র রূপে সম্মান প্রদর্শনের আয়োজন
করেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনা স্বামীর চেতনা ফেরানোর জন্য কুন্তী, দ্রৌপদী, অর্জুনসহ
কুরুবংশের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ অভিযোগ বর্ষণ করেন।

          জনার চোখে ভোজবালা কুন্তী স্বৈরিণী- চরিত্রহীনা নারী। দুর্বাসা মুনির বরে
তিনি বহুভোগ্যা। দুর্বাসার মন্ত্র জপ করে তিনি ধর্মের কাছ থেকে যুধিষ্ঠির, পবনদেবের
কাছ থেকে ভীম, ইন্দ্রের কাছ থেকে অর্জুনকে লাভ করেন। এছাড়া কুমারী কালেই সূর্যের ঔরসজাত
কর্ণকে নিজগর্ভে ধারণ করেন। তাই জনা কুন্তীকে “বহুগামিনী”, “কুলটা”
নারী বলে উল্লেখ করেন। আরও বলেন যে এমন পতিতার গর্ভে কখনো কোনো মহান ব্যক্তির জন্ম
হতে পারে না-

“…….. কুলটা যে নারী-

বেশ্যা- গর্ভে তার কি হে জনমিলা আসি হৃষীকেশ”?

     অর্থাৎ জনার মূল্যায়নে কুন্তী স্বৈরিণী এবং মহাধনুর্ধর বীর অর্জুন জারজ
সন্তান।

         ক্রুদ্ধ জনার অভিযোগের খরতর শর দ্রৌপদীর চরিত্রকেও বিদ্ধ করে। দ্রৌপদীর
সতীত্ব নিয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং তাঁকে শাশুড়ির যোগ্য বধূ বলে উল্লেখ করেন।
পঞ্চপান্ডবকে পতিরূপে বরণ করার জন্য দ্রৌপদীকে তিনি ব্যাঙ্গ করে বলেছেন-

“……. পৌরব সরসে

নলিনী! অলির সখী,রবির অধীনী,

সমীরণ প্রিয়া!”

     পদ্মফুল যেমন মৌমাছি, সূর্য এবং বাতাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ তেমনি
দ্রৌপদী ও পঞ্চপান্ডবের প্রিয়া ও ভোগ্যা। এমন কলঙ্কিত চরিত্রকে জনা ধিক্কার জানিয়েছেন।
মহাভারতে দ্রৌপদীকে রূপান্তরিত লক্ষ্মী বলে উল্লেখ করা হলেও যুক্তি দিয়ে সেই বক্তব্যকে
খন্ডন করেছেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর বলিষ্ঠ এবং অকাট্য যুক্তি-

” লোকমাতা রমা কি হে এ ভ্রষ্টা রমণী”।

অর্থাৎ জনার মূল্যায়নে
দ্রৌপদী ভ্রষ্টা রমণী।

          এভাবে ক্ষুব্দ জনা তীব্র বাক্যবাণে কুন্তী এবং দ্রৌপদী চরিত্রকে ক্ষতবিক্ষত
করেছেন। কখনো বা তিনি ভাষা ব্যবহারের শালীনতার সীমাও ছাড়িয়ে গেছেন।



Download Pdf

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top