“চার ভাষাবংশের দেশ ভারত”
পৃথিবীর
হাজার তিনেক ভাষাকে 25 বা 26 টি ভাষা বংশে
বর্গীভূত করা হয়েছে। এর প্রধান 12 টি ভাষা বংশের
মধ্যে ভারতে প্রচলিত রয়েছে চারটি ভাষাবংশ।
1. ইন্দো-ইউরোপীয় (আনুমানিক2500 খ্রিস্টপূর্ব)
2. অস্ট্রিক (ভারতের প্রাচীনতম ভাষা বংশ)
3. দ্রাবিড় (আনুমানিক 3500 খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)
4. ভোট চিনীয়/ভোট চিনা (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দী)
যদিও আন্দামানী, করেন, মন এর মতো কয়েকটি
অবর্গীভূত ভাষা ও ভারতে প্রচলিত রয়েছে। নিচে চারটি ভাষা বংশের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
দেওয়া হল-
1. ইন্দো-ইউরোপীয়: পৃথিবীর প্রধান ভাষা বংশ গুলির মধ্যে অন্যতম হলো
ইন্দো-ইউরোপীয়। এর 9টি শাখার মধ্যে
একটি হলো ইন্দো-ইরানীয়। এই ইন্দো-ইরানীয়ের যে শাখাটি ভারতে প্রবেশ করে
আর্যাবর্তের সেই আগত জনগোষ্ঠীর ভাষাই হলো ভারতীয় আর্যভাষা। আনুমানিক 1500খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত প্রচলিত ভারতীয়
আর্য ভাষার বিবর্তনকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে- a. প্রাচীন ভারতীয় আর্য
b. মধ্য ভারতীয় আর্য এবং
c. নব্য ভারতীয় আর্য
ভারতীয় আর্য ভাষার
প্রাচীনতম নিদর্শন ঋকবেদ।এই ভাষাবংশ থেকেই বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া, অসমীয়া, মারাঠী, পাঞ্জাবি প্রভৃতি ভাষার জন্ম হয়েছে।
2. অস্ট্রিক: Proto-Australoid বা প্রত্ন অস্ত্রাল জাতির
ভাষাকেই অস্ট্রিক ভাষা বংশ বলা হয়। এই ভাষাবংশই ভারতের প্রাচীনতম ভাষা গোষ্ঠী।
বর্তমান ভারতের প্রায় 65 টি ভাষা এই ভাষা
বংশ জাত। ভারত ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া প্রভৃতি দেশে এই ভাষা বিস্তৃত। অস্ট্রিক ভাষা বংশের দুটি শাখা-
a. অস্ট্রোনেশীয় এবং
b. austro-asiatic
ভারতে
প্রচলিত austro-asiatic
এর তিনটি ধারা-
ক. পশ্চিমা: যা আসলে কোল বা
মুন্ডা শাখা
খ. মধ্য দেশীয়: যার নাম মোন
খমের এবং গ.পূর্বী: যার অস্তিত্ব সংশয়াতীত নয়। ভারতে প্রচলিত অস্ট্রিক ভাষা
বংশের উল্লেখযোগ্য ভাষা গুলি হল- সাঁওতালি, মুন্ডারি, কোরকু, শবর,
খাড়িয়া, খাসি, নিকোবরী প্রভৃতি।
3. দ্রাবিড়: ভূমধ্য জনগোষ্ঠীর (Mediterranean)-র ভাষাই দ্রাবিড় ভাষা। ভাষাভাষীর সংখ্যার দিক থেকে এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা
বংশ। দ্রাবিড় ভাষা বংশের তিনটি শাখা-
ক. দক্ষিণী:
এটি দ্রাবিড় ভাষা বংশের প্রধানতম শাখা- যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম এবং
কন্নড় ভাষা।
খ. উত্তর
দেশীয় শাখার উল্লেখযোগ্য ভাষা হল ওঁরাও এবং মালতো বা মালপাহাড়ি।
গ. মধ্যদেশীয়
শাখার সাতটি ভাষার মধ্যে গোণ্ডী, কোন্দ,কুই,পরজি উল্লেখযোগ্য।
ভারতের তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, কেরালা, বিহার, উড়িষ্যা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি
রাজ্যে দ্রাবিড় ভাষার প্রচলন রয়েছে।
4. ভোটচিনা: আর্যদের আগমনের পূর্বে যে মঙ্গোলয়েড জনগোষ্ঠী ভারতে প্রবেশ করে, তাদের ভাষাই ভোটচিনা ভাষা বংশ। ভোটচিনা ভাষা বংশের প্রধান
দুটি শাখা হল-
ক. ভোটবর্মী
এবং
খ. তাইচিনা ভোটবর্মী শাখা ভারতের হিমালয় অঞ্চলে প্রচলিত। এই ভাষা
বংশের উল্লেখযোগ্য ভাষা হল ভোটিয়া। এছাড়া অরুণাচল প্রদেশ ও আসামে প্রচলিত আকা, আবর, দফলা, মিসমি এবং মিরি ভাষা ভোটচিনার অন্তর্গত। আসাম, ত্রিপুরা, মনিপুর, নাগাল্যান্ড অঞ্চলে প্রচলিত ভোটচিনা ভাষার চারটি বিভাগ
রয়েছে- বোরো বা বোডো, নাগা, কুকিচিন এবং বর্মী। তাই চিনা বর্গের শ্যামিয় শাখার খামতি
উত্তর-পূর্ব আসাম অরুণাচল প্রদেশের প্রান্তীয় অঞ্চলে প্রচলিত।
- বাংলা ভাষার তিনটি পর্যায় বা স্তর আলোচনা করো |
- শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের সমাজচিত্র বা সামাজিকতা বর্ণনা করো
- রামায়ণের শ্রেষ্ঠ কবি হিসাবে কৃত্তিবাস ওঝার কৃতিত্ব
- কাশীরাম দাসের কৃতিত্ব
- মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কে? তাঁর কৃতিত্বের মূল্যায়ন করো
- চর্যাপদের বিষয়বস্তু কি?
- চর্যাপদের সমাজচিত্র বর্ণনা দাও
- চর্যাপদ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব আলোচনা করো
- চর্যাপদের সাহিত্যমূল্য অথবা কাব্যমূল্য বিচার করো