চর্যাপদ এর বিষয়বস্তু | একাদশ শ্রেনি সাহিত্যের ইতিহাস |

চর্যাপদ এর বিষয়বস্তু


 চর্যাপদ


প্রাসঙ্গিক তথ্য:

1. চর্যাপদ বাংলা
সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন।

2. রচনাকাল: আনুমানিক
দশম- দ্বাদশ শতাব্দী।

3. পদ সংখ্যা:
মোট পদ ছিল 50 টি, কিন্তু 3.5 টি পদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্তমান পদ সংখ্যা 46.5 টি।
তিব্বতি অনুবাদে পদ আছে 51 টি।

4. কবি সংখ্যা:
24 জন।

5. প্রধান কবিরা:
লুই পাদ,কাহ্ণ পাদ, ভুসুকু পাদ, চাটিল পাদ।

6. আবিষ্কারক:
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।

7. আবিষ্কার স্থান
ও কাল
: নেপালের রাজ দরবার থেকে 1907 খ্রী:।

8. চর্যাপদ এর
প্রকৃত নাম:
চর্যাচর্যবিনিশ্চয় (হরপ্রসাদ শাস্ত্রীকৃত)

9. প্রকাশকাল
(গ্রন্থাকারে):
1916 খ্রী:।

10. গ্রন্থনাম:
“হাজার বছরের পুরানো বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোঁহা।

(এই গ্রন্থে
“চর্যাচর্যবিনিশ্চয়”, সরহের “দোহাকোষ” কৃষ্ণাচার্যের “দোহাকোষ”
এবং “ডাকার্ণব” এই চারটি পুঁথির একত্রিত প্রকাশ ঘটেছিল)

11. চর্যাপদের
ভাষা:
সন্ধ্যা ভাষা- মাগধি অপভ্রংশ জাত প্রাচীন বাংলা ভাষা।

 

চর্যাপদ এর বিষয়বস্তু:

 


চর্যাপদ এর বিষয়বস্তু: প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের প্রধান
বিষয় ছিল ধর্ম। চর্যাপদ বৌদ্ধ সহজিয়া সাধন সংগীত। বাস্তব জীবনের জরামরণ ও পুনর্জন্মের
বিষচক্র পার হয়ে নির্বাণ লাভই বৌদ্ধ ধর্মের মূলমন্ত্র। তবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে গিয়ে
পদকর্তা নানারকম গুঢ় তান্ত্রিক আচার আচরণের উল্লেখ করেছে, যা অবলম্বন করলেই সাধক অতি
সহজেই নির্বাণে পৌঁছে যেতে পারেন। বৌদ্ধ সাধক বা সিদ্ধাচার্যগণ “কায়াসাধনা”
বা সহজিয়া সাধন পদ্ধতির সেই সমস্ত গভীর গূঢ় তত্ত্বকথা ও সাধন প্রণালী সাংকেতিক ভাষার
সাহায্যে কবিতায় প্রকাশ করতেন। সেই সমস্ত পদই বাংলা সাহিত্যে চর্যাপদ নামে পরিচিত।
অর্থাৎ বৌদ্ধ ধর্ম তত্ত্ব দর্শন ও সহজিয়া সাধন প্রণালীই চর্যাপদ এর মুখ্য বিষয়। তবে
তত্ত্ব কথাই প্রধান বিষয় হলেও কবিগণ অল্পবিস্তর প্রতিভার ও পরিচয় দিয়েছেন। ভাষা,
ছন্দ,রূপ নির্মিতিতে অসাধারণ এই পদগুলিতে নানা বিচিত্র রূপক, প্রতীক ও চিত্রকল্পের
সাহায্যে বৌদ্ধধর্ম, দর্শন তত্ত্ব ও সাধন প্রণালী আভাসিত হয়েছে। সর্বোপরি চর্যাপদে
তৎকালীন সাধারণ বাঙালির প্রতিদিনের ধূলিমলিন জীবনচিত্র, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার টুকরো
টুকরো রেখাচিত্র জীবন্ত হয়ে উঠেছে।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *