“বাড়ির কাছে
আরশিনগর” কবিতার ভাববস্তু আলোচনা করো। একাদশ শ্রেনি বাংলা নোটস সঙ্গে PDF ডাউনলোড।
“বাড়ির কাছে আরশিনগর” কবিতার ভাববস্তু
কবিগণ কবিতার মধ্যে আপন হৃদয়কে উন্মুক্ত করে দেন। হৃদয়ের সেই ভাব বা উপলব্ধি
নানা বর্ণ রঞ্জিত হয়ে আত্মপ্রকাশ করে কাব্যের আঙিনায়। আবার কখনো তা রুপক-প্রতীকের
আবরণে আবৃত হয়ে পাঠকের দরবারে এসে হাজির হয় আবরণ উন্মোচন এর অপেক্ষায়। গীতিকার লালন
ফকিরের “বাড়ির কাছে আরশিনগর” কবিতাটি একটি রূপক প্রতীক আশ্রিত কবিতা। কবিতাটির
রূপকের অন্তরালে রয়েছে বাউল সাধন তত্ত্ব এবং বাউলের চির অতৃপ্ত আশঙ্কার আবেগ-উচ্ছ্বাসময়
প্রকাশ।্র
কবিতাটি পড়লেই একটা সুসংহত অর্থ আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কবির বাড়ির
কাছেই রয়েছে “আরশিনগর” গ্রাম। সেখানে বাস করে কবির কোনো এক পড়শী বা প্রতিবেশী।
সেই গ্রামকে বেষ্টন করে আছে অগাধ জলরাশি।পারাপারের জন্য কোন তরণী বা নৌকা নেই। তাই
সেই গ্রামে পৌঁছাতে পারেন না তিনি। আবার অদ্ভুত সেই পড়শি ।যার হাত, পা, কাঁধ, মাথা
কিছুই নেই। সে কখনো বা শূন্যে আবার কখনো বা জলের মধ্যে অবস্থান করে। তবে সেই পড়শীকে
ছুঁলে মৃত্যু যন্ত্রণা দূর হতো। সেই পড়শীকে দেখার অন্তহীন বাসনা কবির মনে।কিন্তু এত
কাছে থেকেও তাদের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান। কবি একদিন ও তাকে দেখতে পেলেন না।
কবিতাটির এই আপাত রূপক প্রতীকের অন্তরালে রয়েছে সুগভীর বাউল সাধন তত্ত্ব
কথা। আসলেই এই আরশিনগর হলো কবির মন। যেখানে রয়েছে কবির মনের মানুষ অর্থাৎ ঈশ্বর। কবিতায়
যিনি পড়শী রূপে চিহ্নিত। মনের মধ্যেকার সেই মনের মানুষকে সহজে দেখা যায় না।তার জন্য
প্রয়োজন গভীর সাধনা। ত্যাগ করতে হয় লোভ-লালসা, বিষয় বাসনা। এই লোভ- লালসা, কামনা-
বাসনাকে “অগাধ পানি” বলা হয়েছে। ঈশ্বর বা মনের মানুষের সাথে মিলনের প্রতিবন্ধকতা।
এই প্রতিবন্ধকতা থেকে উত্তরণের জন্য চাই তরণী অর্থাৎ সাধনা বা গুরুর সান্নিধ্য। কিন্তু
কবি সেই সাধন-ভজন জানেন না।তাই অন্তহীন বাসনা নিয়ে, না পাওয়ার বেদনা নিয়ে কবি ব্যাকুল।
ঈশ্বর সান্নিধ্য লাভ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। মনের মানুষের সাথে মিলন ও সম্ভব হচ্ছে না।
কবিতাটির মাঝখানে পড়শীর স্বরূপ ও ব্যাখ্যাত হয়েছে। পড়শী অর্থাৎ মনের মানুষ বা ঈশ্বর
নিরাকার। তাঁর “হস্ত-পদ -স্কন্দ-মাথা” অর্থাৎ অবয়ব নেই। পঞ্চভূতে গড়া এই
বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তথা মানবদেহ রূপ অনুব্রহ্মাণ্ড জুড়ে তার অশরীরী অবস্থান। কখনো শূণ্য
মার্গে আবার কখনো বা বস্তুজগতে বিরাজ করেন-
“ক্ষণেক
ভাসে শূণ্যের উপর/আবার ক্ষণেক ভাসে নীরে।” পংক্তিতে তারই ব্যঞ্জনা ফুটে ওঠে। তিনি
সর্বময়ী কর্তা। অসীম ক্ষমতার অধিকারী সেই ঈশ্বর বা মনের মানুষের সাথে মিলন করলে ইহজীবনের
সকল যন্ত্রণা দূর হতো বা মহামুক্তি লাভ করতেন কবি। যম-যাতনা যেত দূরে।সেই ঈশ্বর মনের
মধ্যে অবস্থান করলেও তিনি বাউল এর কাছে ধরা ছোঁয়ার অতীত। লক্ষ যোজন ব্যবধান এর মধ্যে
থেকে বাউলকে তাই চিরজীবন ব্যাকুল হয়ে তার সন্ধানে নিরত থাকতে হয়।
- নীলধ্বজের চরিত্র আলোচনা করো
- জনার চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো
- “মহারথী প্রথা কি হে এই, মহারথী”? কার প্রতি কে এই উক্তি করেছেন? মহারথী প্রথা কি? কে কিভাবে তা লংঘন করেছেন?
- কুন্তী ও দ্রৌপদী সম্পর্কে জনার অভিযোগ কি ছিল?
- ব্যাসদেব কে? তার বিরুদ্ধে জনার অভিযোগ কি?
- জনাকে বীরাঙ্গণা বলা যুক্তিযুক্ত কিনা?