ধ্বনিমূল বা
স্বনিমের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য
ভাষায় ব্যবহৃত বাগধ্বনি দুই
ধরনের ভূমিকা পালন করে। এই দুই ধরনকে বলা হয় ধ্বনিমূল ও সহধ্বনি।
ধ্বনিমূলের সংজ্ঞা হিসেবে বলা যায় ভাষার যে সব ক্ষুদ্রতম
ধ্বনিগত এককের মধ্যে পারস্পরিক মূলধ্বনিগত বিরোধ (Phonetic contrast) থাকে এবং যার ফলে শব্দের অর্থের
পরিবর্তন
ঘটে।সেই একক গুলির প্রত্যেকটিকে ধ্বনিমূল বা স্বনিম (Phonem) বলে।
অর্থাৎ সহজে বলা যায় যে, স্বনিম বা ধ্বনিমূল হল একাধিক শব্দের মধ্যে অর্থের পার্থক্য সৃষ্টিকারী
ক্ষুদ্রতম ধ্বনিগত একক।
যেমন- কাল= ক+আ+ল
খাল= খ+আ+ল
উপরের “কাল” এবং “খাল” শব্দ দুটিতে
অনেক মিল থাকা সত্বেও ‘ক‘ এবং ‘খ‘ ধ্বনির মহাপ্রাণতাগত পার্থক্য বা বিরোধ থাকার কারণেই শব্দ
দুটির অর্থ পার্থক্য ঘটেছে। তাই এখানে /ক/ এবং /খ/ হল দুটি ধ্বনিমূল বা স্বনিম।
• বৈশিষ্ট্য:
১. স্বনিমের
বৈশিষ্ট্যের কথা বলতে গিয়ে ফরাসি ভাষাবিজ্ঞানী ফার্দিনান্দ দ্য সোস্যুর স্বনিমকে
-“The
fundamental unit of sound in any language” বলেছেন। অর্থাৎ স্বনিম গুলি মৌলিক।
২. প্রত্যেকটি
ধ্বনিমূলের মধ্যে পারস্পরিক স্বনিমীয় বিরোধ (Phonetic contrast) থাকে। এই কারণেই ধ্বনিমূলের পরিবর্তন শব্দের অর্থের
পরিবর্তন ঘটায়। “জাল” এবং “জাম” শব্দের /ল/ এবং /ম/এই
স্বনিমগত পার্থক্যের জন্য অর্থ পার্থক্য ঘটেছে।
৩. বেশকিছু
ধ্বনিমূলের আবার একাধিক উচ্চারণ বৈচিত্র আছে। যেমন- “শ্লীল” এবং
“শীল” শব্দের শ ধ্বনি যথাক্রমে(s) এবং ($) রূপে উচ্চারিত।তাই একটি স্বনিম একটিমাত্র ধ্বনি নয় তা একটি ধনিগুচ্ছ
বা ধনি পরিবার (Class of sound)।
৪. ধ্বনিমূল
আসলে একটি কল্পনা, যার বাস্তব উচ্চারণ
বৈচিত্র হল সহধ্বনি। ভাষা ব্যবহারের সময় এই বাস্তব উচ্চারণ অর্থাৎ সহধ্বনিগুলিই
উচ্চারিত হয়।
যেমন-
- বাক্যতত্ত্ব
- শব্দার্থের উপাদানমূল তত্ব নিয়ে আলোচনা করো
- বাংলা ভাষার উৎপত্তি সরলপথরেখা আলোচনা কর।
- সংস্কৃতকে বাংলা ভাষার জননী বলা কতটা যুক্তিযুক্ত?
- “চার ভাষাবংশের দেশ ভারত”- আলোচনা করো |
- বাংলা ভাষার তিনটি পর্যায় বা স্তর আলোচনা করো |
- শৈলীবিজ্ঞান | শৈলীবিজ্ঞানের পরিভাষা |
- ভাষাবিজ্ঞান | সংজ্ঞা, ভাষার দিক, ভাষার মাত্রা, ভাষার পরিবর্তন |
- ভাষাবিজ্ঞানে প্রধান তিনটি শাখা আলোচনা করো
- রূপমূল বা রূপিমের সংজ্ঞা দাও | রূপমূলের শর্ত বা বৈশিষ্ট্য লেখ ।
- ধ্বনির স্বরূপ আলোচনা করো