আধুনিক বাংলা কাব্যে জীবনানন্দ দাশ
আধুনিক বাংলা কাব্যের
প্রতীক পুরুষ জীবনানন্দ দাশ রবীন্দ্রোত্তর বাংলা কাব্যজগতে এক অবিস্মরণীয় নাম (১৮৯৯-১৯৫৭)
। ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ই ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্মকাল। আদি নিবাস ছিল বরিশাল। পিতা সত্যানন্দ
দাশ এবং মাতা কুসুমকুমারী দাশ। পেশায় ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের
২২শে অক্টোবরে ট্রাম দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়।
✿ সাহিত্য পরিচয়:
জীবনানন্দের গ্রন্থ গুলির প্রকাশকাল ও রচনাকালের মধ্যে পারস্পর্য নেই। তাঁর প্রথম প্রকাশিত
কবিতা “বর্ষা আহ্বান”, ব্রহ্মবাদী পত্রিকায়
প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশায় প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ “ঝরাপালক” (১৯২৮),
“ধূসর পান্ডুলিপি” (১৯৩৬), “বনলতা সেন” (১৯৪২), “মহাপৃথিবী”
(১৯৪৪), “সাতটি তারার তিমির” (১৯৪৮)। মৃত্যুর পর প্রকাশিত কাব্যগুলি হল
– “রুপসীবাংলা” (১৯৫৭), “বেলা- অবেলা- কালবেলা” (১৯৬১),
“সুদর্শনা” (১৯৭৩)।
✿ অবদান ও বৈশিষ্ট্য:
• “ছবি আঁকতে
গিয়ে তাঁর নিপুণতা অসাধারণ। তার উপর ছবিগুলো শুধু দৃশ্যের নয়, গন্ধের ও স্পর্শের
ও বটে”- বুদ্ধদেব বসু।
রবীন্দ্রনাথের ভাষায় “চিত্ররূপময়তা”-
ই তার প্রধান বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতি ও জীবনের নানা চিত্র রচনায় তিনি অসামান্য।
• জীবনানন্দ ছিলেন
প্রখর ইন্দ্রিয় সচেতন কবি। তাই তিনি অনুভব করেন ঘুমের ঘ্রাণ, রৌদ্রের গন্ধ, নরম জলের
গন্ধ, ঝিঁঝির গন্ধ, মেয়েলি হাতের স্পর্শ প্রভৃতি।
• তাঁর রচিত চিত্র
গুলি যেন দু-একটা টানেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এবং সৃষ্টির পটভূমিতে রয়েছে একটি অস্পষ্টতার
আবরণ। যদিও সে কারণে অনেকে তাঁকে দুর্বোধ্যতার কবি বলেছেন।
• প্রাচীন মূল্যবোধ
যখন বিধ্বস্ত এবং কোনো নতুন মূল্যবোধ ও সৃষ্টি হয়নি সেই অবক্ষয়িত সমাজ ও জীবনের রূপ
প্রত্যক্ষ করার ফলে তাঁর কাব্য নৈরাশ্য, ক্লান্তি ও মৃত্যুচেতনায় অবসন্ন তাই তিনি
হেমন্ত আর প্রান্তরের কবি।
• চেতন-অচেতন, অন্তর
ও বহির্জগতের সমস্ত দৈহিক ও মানসিক ব্যবধান ঘুঁচিয়ে দিয়ে তিনিই প্রথম বাংলা কাব্যে
পরাবাস্তববাদ এর প্রবর্তন করেন। “বনলতা সেন ” কবিতায় ” মুখ তার শ্রাবস্তীর
কারুকার্য”, “বিদিশার নিশা”, তাছাড়া “গাছেরা একবার হয় হরিণ একবার
বাঘিনী” প্রভৃতি বর্ণনায় বাস্তব আর চিত্রকল্প মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
• “কবিতার অস্থির
ভিতর থাকবে ইতিহাস চেতনা এবং মর্মে থাকবে কালজ্ঞান”- (জীবনানন্দ) কবির ঝরাপালক,
বনলতা সেন প্রভৃতি কাব্যে সেই ইতিহাস ও কাল চেতনার স্পষ্ট প্রকাশ।
• যন্ত্র যুগের নিষ্পেষণ,
কুশ্রীতা, অসঙ্গতিতে কবি মর্মাহত এবং যুদ্ধ ও মৃত্যুর ভয়াবহতায় হতাশ ও ব্যথিত হলেও বাস্তবতার পাশাপাশি সৌন্দর্যচেতনা ও রোমান্টিকতার
অভাব নেই তাঁর কাব্যে। পৃথিবী যতই অসুখে আক্রান্ত হোক তার কাছে মানুষের ঋণ স্বীকার
করেছেন কবি।
✿ উপসংহার: কাব্যে
রচনার প্রথম দিকে তিনি মোহিতলাল, সত্যেন্দ্রনাথ,
নজরুল এবং পরে এলিয়ট ও পাউন্ডের প্রভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন বটে তবে শিল্প নির্মিতিতে
তাঁর নিজস্বতা প্রকট। মুখের ভাষা এবং দেশি-বিদেশি শব্দের স্বচ্ছন্দ ব্যবহার, ক্ষুদ্র
ও বৃহৎ চরণ বিন্যাস, গদ্য কবিতা রচনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাঁর কৃতিত্ব অনস্বীকার্য।
✮ কথাসাহিত্যে বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়/ বনফুলের অবদান আলোচনা করো
✮ বাংলা গদ্য সাহিত্যে নজরুল ইসলামের অবদান আলোচনা করো
✮ কথাসাহিত্যে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অবদান বর্ণনা করো
✮ বাংলা কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান আলোচনা করো
✮ আধুনিক কাব্য সাহিত্যে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান আলোচনা করো
I am sure this piece of writing has touched all the internet users,
its really really pleasant post on building up new webpage.
quorionex.top
Very quickly this web page will be famous among all blogging people, due to it’s pleasant content