বাংলা গদ্য সাহিত্যে নজরুল ইসলাম
☀ ভূমিকা: বিশশতকের
তিনের দশকে বিদ্রোহের বহ্ণিশিখা জ্বেলে বাংলা সাহিত্যের আকাশে ধূমকেতুর মতো যিনি আবির্ভূত
হলেন, যাঁর অভিনবত্ব আর বিদ্রোহের বিস্ফোরণে স্বয়ং কবিগুরু ও সাময়িক ভাবে কিছুটা
ম্লান হয়ে গিয়েছিলেন, সেই বিস্ময়কর বলিষ্ঠ কবি ব্যক্তিত্ব হলেন কাজী নজরুল ইসলাম
(১৮৯৯-১৯৭৬)। বিদ্রোহাত্মক কবিতা ও গান রচনার জন্য তিনি “বিদ্রোহী কবি”-
আখ্যায় ভূষিত হন।
☀ সাহিত্য পরিচয়: নজরুল প্রধানত কবি, তবে গদ্য রচনাতেও তিনি
অকৃপণ ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল -“অগ্নিবীণা”(১৯২২),
“বিষের বাঁশি”(১৯২৪), “সাম্যবাদী”(১৯২৫), “সর্বহারা”(১৯২৬),
“ফনিমনসা”(১৯২৭), “প্রলয় শিখা”(১৯৩০), “দোলনচাঁপা”,
“ছায়ানট”, “পুবের হাওয়া”, “সিন্ধু হিল্লোল”,
“চক্রবাক “, “সন্ধ্যা” প্রভৃতি। এছাড়া “ব্যথার দান”,
“রিক্তের বেদন”, “শিউলি মালা” প্রভৃতি গল্পগ্রন্থ, “বাঁধনহারা”,
“মৃত্যুক্ষুধা”, “কুহেলিকা” উপন্যাস এবং “বুলবুল”,
“চোখের চাতক”, “বনগীতি”, “গীতি শতদল” প্রভৃতি গীতি সংকলন
রচনা করেন। “যুগবাণী” তাঁর রচিত প্রবন্ধগ্রন্থ।
☀ কাব্য বৈশিষ্ট্য
ও কবি প্রতিভা:
• বিদ্রোহী: নজরুল
তাঁর কাব্য জীবনের শুরুতে রবীন্দ্রনাথের সস্নেহ সান্নিধ্য লাভ করলেও তাঁর কাব্যের প্রধান
ধারাটি ছিল সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। বিদ্রোহ -ই ছিল তাঁর কাব্যের প্রাণ। তবে সে বিদ্রোহ
শুধু ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে নয়- সামাজিক অর্থনৈতিক নানা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।
জাতপাত ও সকল প্রকার ভেদ বুদ্ধির বিরুদ্ধে সাম্যবাদী কবির এই সোচ্চার বিদ্রোহ ঘোষণার
কারণেই তিনি বিদ্রোহী কবি।
• রাজনৈতিক চেতনা:
বিদেশি সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বিদেশি শত্রুর বিরুদ্ধে তিনি ছড়িয়েছেন আগুনের
ফুলকি। বোধ হয় রাজনৈতিক চেতনার ক্ষেত্রে এমন উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উচ্ছ্বাস আর কোনো কবি
সঞ্চার করতে পারেননি।
• যৌবন শক্তির ঘোষণা:
তাঁর কাব্য ও গানে বীর্যবান প্রাণবহ্ণি নিত্য দীপ্যমান- যা জাতিভেদ মুছে দিয়ে জনমানসে
ভারত ঐক্যের নিবিড় উপলব্ধি ও বিশুদ্ধ স্বাদেশিক মনোভাব সৃষ্টি করেছে। তাঁর কাব্য কবিতায়
তিনি সেই যৌবন শক্তিকেই জয়মাল্য পরিয়েছেন।
• মানবতাবাদী: নজরুল
শুধু বিদ্রোহী নন তিনি ছিলেন আদর্শ মানবতাবাদী। তাই তাঁর কাব্যে শাসন-শোষণ ক্লিষ্ট,
বঞ্চিত নিপীড়িত মানবাত্মার প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনার প্রকাশ ঘটেছে।
• সাম্যবাদী: সাম্যবাদে
বিশ্বাসী ছিলেন কবি নজরুল। ধর্ম,জাতি, সাম্প্রদায়িকতা, প্রাদেশিকতা এমনকি নারী পুরুষের
ভেদ বৈষম্যের সীমা অতিক্রম করে তিনি সবাইয়ের সমমর্যাদা ও সমানাধিকারের কথাই ধ্বনিত
করেছেন।
• রোমান্টিকতা: বাস্তববাদী
হয়েও নজরুল প্রেম ও প্রকৃতিকে নিয়ে আবেগপূর্ণ কবিতা বিশেষত গান রচনা করেছেন এবং জনমনে
তার আবেদন আজও অম্লান- যা নজরুলের রোমান্টিক প্রতিভার পরিচয়াক।
• ভক্তি বিনম্র সত্তা:
সর্বোপরি এই বিদ্রোহী মানুষটির অন্তরে যে একটি ভক্তিবিনম্র সত্তা অতি সন্তর্পনে লালিত
হয়ে উঠেছিল- তার পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর শ্যামা সংগীত ও ইসলামী গান থেকে।
নজরুলের কবিতা এককালে
প্রচন্ড গতিবেগ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু তাঁর কবিতার অন্তর্নিহিত শক্তি তেমন তীব্র ছিল
না। আসলে দুর্বার প্রাণাবেগ ও পরিমার্জনের ধৈর্য হীনতার কারণেই এই শৈথিল্য। তবু যুগের
সৃষ্টি হয়েও তিনি যুগকে অতিক্রম করে আজও অম্লান। ভাষা, ছন্দ, অলঙ্কার ব্যবহারে তাঁর
দক্ষতা ও কম নয়। আজ তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি হলেও পৃথিবীর বাংলা ভাষাভাষী মানুষের
তিনি আত্মার আত্মীয়।
✹ আধুনিক বাংলা কাব্যে মধুসূদন দত্তের অবদান আলোচনা করো
✹ আধুনিক কাব্য সাহিত্যে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান আলোচনা করো
✹ বাংলা গানের ইতিহাসে নজরুল ইসলামের অবদান
✹ বাংলা গানের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথের অবদান
✹ বাংলা গানের ইতিহাসে রজনীকান্ত সেনের অবদান
✹ বাংলা গানের ইতিহাসে মান্না দের অবদান
✹ বাংলা গানের ইতিহাসে অতুলপ্রসাদ সেনের অবদান
✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান
✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান
✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজ এর অবদান
❤ বাংলা কথাসাহিত্যে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান আলোচনা করো
❤ চিকিৎসাবিদ্যা / বিজ্ঞানচর্চায় নীলরতন সরকারের অবদান আলোচনা করো
❤ বিজ্ঞানচর্চায় বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান আলোচনা করো
❤ বিজ্ঞান সাধনায় জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান আলোচনা করো
❤ বাঙালি চিকিৎসাবিদ্যায় কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় (বসু) এর অবদান বর্ণনা করো
❤ সংগীতে সলিল চৌধুরীর অবদান বর্ণনা করো
❤ বাংলা চলচ্চিত্রে তপন সিংহের অবদান বর্ণনা করো
❤ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সত্যজিৎ রায়ের অবদান লেখ
❤ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ঋত্বিক ঘটকের অবদান লেখ
❤ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল, যামিনী, অবনীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথ, রামকিঙ্করের ভূমিকা
❤ বাংলা গানের ইতিহাসে নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ, রজনীকান্ত, মান্না দে, অতুলপ্রসাদ সেনের অবদান