ব্যাপ্যতা কথার অর্থ
ব্যাপ্যতা কথার অর্থ হল ব্যাপকতা বা বিস্তার।
অর্থাৎ যখন কোন বস্তু তার গুণটি সম্পূর্ণ অর্থে প্রকাশ করে তখন সেটি ব্যাপক বুঝি। তাই
অনেক সময় আমরা বলে থাকি ব্যাপক বাড়ি। অর্থাৎ গুনে কিংবা মানে বাড়িটির অনেক বেশি
অর্থ আমরা প্রকাশ করি। ঠিক সেইভাবে আমরা ব্যাপক রাস্তা, ব্যাপক পরীক্ষা ইত্যাদি গুণের
প্রকাশ ঘটাই। আর ঠিক সেইভাবে আমরা পদের ব্যাপ্যতা বিষয়টি বুঝবো। যেটি নিম্নে আলোচনা
করা হল-
পদের ব্যাপ্যতা
●
পদের ব্যাপ্যতা -সাধারণভাবে আমরা পদ বলতে
বুঝি অর্থ যুক্ত শব্দ বা শব্দসমষ্টি। সেইভাবে একটি নিরপেক্ষ বচনে দুটি পদ থাকে। যথা-
উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ ।তাই আমরা যখন বলি কোনো নিরপেক্ষ বচনে যে পদ তার সম্পূর্ণ
ব্যক্তার্থ প্রকাশ করে তাকে পদের ব্যাপ্যতা বলে। আর যে পদ তার আংশিক ব্যক্তার্থ বচনে
প্রকাশ করে তাকে পদের অব্যাপ্যতা বলে। সুতরাং এর দ্বারা বোঝায়- পদের ব্যাপ্যতা বলতে
পদের অর্থগত বিস্তৃতি কে।
বিভিন্ন প্রকার নিরপেক্ষ বচনের পদের ব্যাপ্যতা ও অব্যাপ্যতা দৃষ্টান্তসহ আলোচনা
●বিভিন্ন নিরপেক্ষ বচনের পদের ব্যাপ্যতা ও অব্যাপ্যতা ব্যখ্যা -আমরা জানি নিরপেক্ষ বচন চারটি। এখন সেই
বিভিন্ন প্রকার নিরপেক্ষ বচনের অর্থগত বিস্তৃতির ভিত্তিতে কোন বচনে কোন কোন পদ ব্যাপ্য
হয় তা দৃষ্টান্তসহ নিম্নে আলোচনা করা হল –
● A বচনের পদের ব্যাপ্যতা ও ও অব্যাপ্যতা-
A- সকল মানুষ হয় মরণশীল।
এখানে উদ্দেশ্য পদ মানুষ শ্রেণীটি পরিমাণের
দিক থেকে “সকল মানুষ” বা মানুষ জাতির সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করছে, তাই পথটি
ব্যাপ্য হয়েছে।
আর
উক্ত বচনের বিধেয় পদটি “মরণশীল”- এই গুণটি মানুষ শ্রেণির সম্পূর্ণ অর্থ বোঝালেও
মানুষ ছাড়াও আরও প্রাণীজগৎ যে মরনশীলতার অন্তর্গত সেই অর্থ বাদ পড়ছে। তাই বিধেয় পথটি
বচনে আংশিক অর্থ প্রকাশ করায় এটি অব্যপ্য হয়েছে।
সুতরাং A বচনে উদ্দেশ্য পদ
ব্যাপ্য এবং বিধেয় পদ অব্যাপ্য।
☆ব্যতিক্রম- তবে যেসব A বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ এর ব্যক্তার্থ
সমান বোঝায় সেসব বচনে উদ্দেশ্য- বিধেয় উভয় পদই ব্যাপ্য।
সকল
মানুষ হয় বিচার শীল জীব। এখানে উদ্দেশ্য পদ মানুষ বলতে যেহেতু বিচার শীল জীব কেই বোঝায়,
ঠিক সেই ভাবে বিধেয় পদ বিচারশীল বলতে সেই মানুষকেই বোঝায়। সুতরাং এরূপ বচনে উদ্দেশ্য
ও বিধেয় পদ এর ব্যক্তার্থ যেহেতু সমান বোঝায় সেহেতু এর উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদই
ব্যাপ্য।
● E বচনের পদের ব্যাপ্যতা ও অব্যাপ্যতা –
E- কোনো মানুষ নয় অমর।
উক্ত বচনে” কোনো মানুষ নয়”- বলতে এখানে
মানুষ শ্রেণির সম্পূর্ণ ব্যক্তার্থ প্রকাশ পাচ্ছে। তাই সেই অর্থে উদ্দেশ্য পদ ব্যাপ্য।
আর এর বিধেয় পদ “অমরতা” এই গুণটি এখানে মানুষ শ্রেণি সম্বন্ধে সম্পূর্ণরূপে
অস্বীকার করা বোঝাচ্ছে। তাছাড়া অমর বলতে যাদের বোঝায় তারা মানুষ শ্রেণীর বাইরে একটি
বিশেষ শ্রেণী। এছাড়া আমরা জানি নঞর্থক বচনে বিধেয় পদ উদ্দেশ্যকে অস্বীকার করলে তা
সম্পূর্ণ অর্থে অস্বীকার করে। তাই সেই অর্থে এই বচনে বিধেয় পদটি ব্যাপ্য।সুতরাং বলা
যায় E বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয় পদ ব্যাপ্য।
● I- বচনের পদের ব্যাপ্যতা ও অব্যাপ্যতা –
I- কোন কোন ফুল হয় লাল।
উক্ত বচনে উদ্দেশ্য পদ
“ফুল “শ্রেণীর আংশিক ব্যক্তার্থ প্রকাশ করায় এর উদ্দেশ্য পদটি অব্যাপ্য।
আবার বিধেয় পদ “লাল”-
এই গুণটি আংশিক ফুল সম্বন্ধে স্বীকার করা বোঝাচ্ছে তাই এর বিধেয় পদটি অব্যাপ্য।
সুতরাং I বচনে উদ্দেশ্য ও
বিধেয় উভয় পদই অব্যাপ্য।
● O-বচনের পদের ব্যাপ্যতা ও অব্যাপ্যতা-
O- কোন কোন ফুল নয় লাল ।
উক্ত
বচনে “কোন কোন ফুল” বলতে আংশিক ফুলের অর্থ প্রকাশ পাচ্ছে ।তাই এর উদ্দেশ্য
পদটি অব্যাপ্য।আর এর বিধেয় পদ” লাল”- এই গুণটি আংশিক ফুল সম্পর্কে সম্পূর্ণরূপে
অস্বীকার করা বোঝাচ্ছে। তাই এর বিধেয় পদটি ব্যাপ্য। সুতরাং O বচনে উদ্দেশ্য পদ অব্যপ্য এবং বিধেয় পদ ব্যাপ্য।
☆
ব্যাপ্যতা মনে রাখার বিষয় –
এখন পদের ব্যাপ্যতা বিষয়টি
মনে রাখার জন্য আমরা কেবল একটি মাত্র শব্দ ব্যবহার করব তা হল- AsEbInOp অসেবিনপ। এর
অর্থ বুঝলে জানা যায়-
As- S মানে Subject (উদ্দেশ্য
পদ ব্যাপ্য)।
Eb- b মানে both (উদ্দেশ্য+
বিধেয় পদ ব্যাপ্য)।
In- n মানে none (কোন পদ ব্যাপ্য
নয় )।
Op- p মানে predicate (বিধেয়
পদ ব্যাপ্য)।
☆ পদের
ব্যাপ্যতার বিষয়-
পরিমাণ ও গুণের ভিত্তিতে আমরা
পদের ব্যাপ্যতা নিয়মটি সহজে মনে রাখবো।
ক. পরিমাণের নিয়ম –
1. সামান্য বচনে উদ্দেশ্য
পদ ব্যাপ্য ।
2. বিশেষ বচনে উদ্দেশ্য পদ
অব্যাপ্য।
খ. গুনের নিয়ম –
1. সদর্থক বচনে বিধেয় পদ
অব্যাপ্য।
2. নঞর্থক বচনে বিধেয় পদ
ব্যাপ্য।
More Notes:-English