যুক্তির স্বরূপ |
যুক্তির স্বরূপ
Q. 1.
যুক্তি বিজ্ঞান কাকে বলে ?
Ans- দর্শন এর যে গুরুত্বপূর্ণ
শাখা বৈধ চিন্তার নিয়মাবলী নিয়ে আলোচনা করে, অবৈধ যুক্তি থেকে বৈধ যুক্তি কে পৃথক
করার নিয়ম পদ্ধতি আলোচনা করে, এমনকি অযথার্থ
চিন্তা থেকে যথার্থ চিন্তাকে পৃথকীকরণের আলোচনা করে তাকে যুক্তিবিজ্ঞান বলে।
Q 2.
যুক্তিবিজ্ঞান এর ইংরেজি প্রতিশব্দ কি ?
Ans- যুক্তিবিজ্ঞান এর
ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো “Logic”
Q 3.
“Logic” শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ কি ?
Ans- “Logic”
শব্দটি গ্রিক শব্দ “Logike” থেকে এসেছে। এই “Logike” হলো ল্যাটিন
শব্দ লোগোস এর বিশেষণ। যে “Logos” শব্দের অর্থ হলো চিন্তা বা ভাষা। সুতরাং
বুৎপত্তিগত অর্থের ভিত্তিতে বলা যায়- ভাষায় প্রকাশিত “চিন্তা “সম্বন্ধীয়
বিজ্ঞান হলো যুক্তিবিদ্যা।
Q 4.
“চিন্তা” শব্দটি যুক্তি বিজ্ঞানে কি কি অর্থে ব্যবহৃত
হয় ?
Ans- চিন্তা শব্দটি যুক্তি বিজ্ঞানে দুটি অর্থে ব্যবহৃত
হয়- ব্যাপক অর্থে চিন্তা ও সংকীর্ণ অর্থ চিন্তা।
Q 5. ব্যাপক ও সংকীর্ণ অর্থে চিন্তা বলতে কী বোঝায় ?
Ans- ব্যাপক অর্থে চিন্তা বলতে বোঝায় চিন্তার কত বেশি মাধ্যম আছে
।সেই ভাবে সংবেদন , প্রত্যক্ষণ, স্মৃতি, কল্পনা, অবধারণ, অনুমান ইত্যাদি ।
সংকীর্ণ অর্থে চিন্তা বলতে বোঝায় শুধুমাত্র অনুমান।
Q 6.
যুক্তি বিজ্ঞানে কোন অর্থে চিন্তাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়
?
Ans- সংকীর্ণ অর্থে চিন্তা
রূপে শুধুমাত্র অনুমানকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
Q 7.
অনুমান কাকে বলে ?
Ans- “অনু
“কথার অর্থ পশ্চাৎএবং” মান “কথার অর্থ জ্ঞান ।এককথায় পশ্চাৎ জ্ঞান
অর্থাৎ যে জ্ঞান অন্য জ্ঞান কে অনুসরণ করে তাই অনুমান। কিন্তু যুক্তি বিজ্ঞানীদের মতে
-যে মানসিক প্রক্রিয়ায় জ্ঞাত সত্যের ওপর ভিত্তি করে অজ্ঞাত বিষয়ে জ্ঞান লাভের চেষ্টা
করা হয় অর্থাৎ জানা থেকে অজানা বিষয় কে জানার প্রক্রিয়াই হলো অনুমান ।যেমন- দূরে পর্বতে ধোঁয়াউঠতে দেখে
অনুমান করি পর্বতটি তে আগুন আছে ।
Q 8.
যুক্তি কাকে বলে ?
Ans- এককথায় অনুমানের
ভাষায় প্রকাশিত রূপকেই যুক্তি বল। অন্যভাবে এক বা একাধিক বচনের সমষ্টিকেও যুক্তি বলে।
যেমন- সকল ধুম যুক্ত স্থান হয় বহ্ণি যুক্ত।
পর্বতটি হয় ধুম
যুক্ত। পর্বতটি হয় বহ্ণি যুক্ত ।
Q 9.
যুক্তির অংশ কয়টি ও কিকি ?
Ans- যুক্তির অংশ দুটি। আশ্রয় বাক্য ও সিদ্ধান্ত
।
Q 10.
আশ্রয় বাক্য কাকে বলে ?
Ans- যে বচন বা বচন গুলির
উপর ভিত্তি করে নতুন একটি বচন সিদ্ধান্তরূপে নিঃসৃত হয় তাকে আশ্রয় বাক্য বলে। যেমন-
উক্ত যুক্তিতে প্রথম দুটি বচন হলো আশ্রয় বাক্য ।
Q 11.
সিদ্ধান্ত কাকে বলে ?
Ans- আশ্রয় বাক্যের উপর
ভিত্তি করে যে বচনটি পাওয়া যায় তাকে সিদ্ধান্ত বলে। যেমন- উক্ত যুক্তিতে “পর্বত
হয় বহ্নিমান”- হলো সিদ্ধান্ত বচন ।
Q 12.
যুক্তি কয় প্রকার ও কি কি ?
Ans- যুক্তি হলো দুই প্রকার- অবরোহ যুক্তি ও আরোহ
যুক্তি ।
Q 13.
অবরোহ যুক্তি কাকে বলে ?
Ans- অবরোহ কথার অর্থ
হল অবরোহন করা অর্থাৎ উপর থেকে নিচে নামা। কিন্তু যুক্তি বিজ্ঞানের ভাষায়- “সামান্য
থেকে বিশেষের দিকে এগিয়ে যাওয়া “। তাই যুক্তি বিজ্ঞানীদের
মতে যে যুক্তিতে এক বা একাধিক পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত আশ্রয় বাক্যের উপর ভিত্তি করে অনিবার্যভাবে
একটি সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় এবং যে সিদ্ধান্তটি আশ্রয় বাক্যের কম ব্যাপক বা সমব্যাপক হয় তাকেই অবরোহ যুক্তি বলে।
যেমন – i. সকল কবি
হয় মানুষ(আশ্রয় বাক্য )
∴ কোন কোন মানুষ হয়
কবি (আবর্তিত)
∴ কোন কবি নয় অমানুষ
(বিবর্তিত )
উক্ত যুক্তিতে একটিমাত্র
আশ্রয় বাক্যের উপর ভিত্তি করে দুটি নিয়মেই সিদ্ধান্তটি নিঃসৃত হয়েছে ।
ii. সকল মানুষ হয় মরণশীল ।
রাম হয় একজন মানুষ
।
∴ রাম হয় মরণশীল
।
Q 14.
আরোহ যুক্তি কাকে বলে ?
Ans- যে যুক্তিতে সর্বদা
দুই বা ততোধিক আশ্রয়ে বাক্যের উপর ভিত্তি করে একটি সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়, তবে অনিবার্যভাবে
নয় এবং যে সিদ্ধান্তটি আশ্রয় বাক্যের তুলনায় ব্যাপক হয়। তাকে আরোহ যুক্তি বলে ।
আরোহ কথার অর্থ হল আরোহন করা অর্থাৎ নিচে থেকে উপরে ওঠা কিন্তু যুক্তি বিজ্ঞানের ভাষায়
বিশেষ থেকে সামান্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া ।যেমন -রাম হয় মরণশীল।
রহিম মরণশীল।
যদু হয় মরণশীল ।
∴ সকল মানুষ হয় মরণশীল
।
উক্ত যুক্তিতে দুটি
আশ্রয় বাক্যের ভিত্তিতে একটি সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়েছে এবং এর সিদ্ধান্তটি আশ্রয় বাক্যের
তুলনায় ব্যাপক হয়েছে তাই এটি যথার্থ আরোহ যুক্তি বলা যায় ।
Q 15.
যুক্তির আকার বলতে কী বোঝো ?
Ans- যুক্তির আকার বলতে
বোঝায় যুক্তির কাঠামো বা গঠন অর্থাৎ যেখানে এক বা একাধিক আশ্রয় বাক্য ও একটি সিদ্ধান্ত
বচন থাকে। যেমন- সকল রাজা হয় সুখী (আশ্রয় বাক্য) রাম হয় রাজা ।
∴ রাম হয় সুখী। (সিদ্ধান্ত )
যুক্তির উপাদান বলতে কী বোঝায় ?
Ans- যুক্তির উপাদান বলতে বোঝায় যুক্তির অন্তর্গত বচন
গুলির অর্থ বা বিষয়।
উক্ত যুক্তিতে রাজার
সঙ্গে সুখী থাকার সম্পর্কের কথা ভেবে রাম কেও রাজা ভেবে তার সম্পর্কে সুখী হওয়ার যে
অর্থ প্রকাশ করা হলো ।এটাই হলো যুক্তির উপাদান।
Q 17.
যুক্তির বৈধতা কি ?
Ans- যুক্তির বৈধতা বলতে বোঝায় এর পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত
আশ্রয় বাক্যের ভিত্তিতে নিয়মানুসারে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হওয়া।
Q 18.
একটি যুক্তি কখন বৈধ বলা যায় ?
Ans- যখন একটি যুক্তি তার নির্দিষ্ট নিয়মানুসারে গঠিত
হয় অর্থাৎ আশ্রয় বাক্যের ব্যাপ্য পদ টি সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য তখন যুক্তিটি বৈধ হয়।
উদাহরণ – A-সকল ফুল হয় সুন্দর ।
A-এই বস্তুটি হয়
ফুল ।
∴ এই বস্তুটি হয়
সুন্দর।
এখানে দুটি আশ্রয়
বাক্যের পারস্পরিক সম্বন্ধের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত টি পাওয়া যায় এবং এর হেতু পদ “ফুল”
আশ্রয় বাক্যে ব্যপ্য হয়েছে। এছাড়া এর পক্ষ পদ “এই বস্তুটি” আশ্রয় বাক্যে
ব্যপ্য হয়েই সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়েছে। তাই
এই যুক্তিটি বৈধ হয়েছে।
যুক্তির অবৈধ তা বলতে কী বোঝো ?
Ans- যখন কোনো যুক্তি
তার নির্দিষ্ট নিয়ম লঙ্ঘন করে গঠিত হয় অর্থাৎ যার হেতু পদ আশ্রয় বাক্যে ব্যাপ্য
হয় না। আবার সিদ্ধান্তের ব্যাপ্য পদ আশ্রয় বাক্যে ব্যাপ্য হয় না, এমনকি আশ্রয় বাক্য
সত্য হলেও সিদ্ধান্ত মিথ্যা হয় তাকেই যুক্তির অবৈধ তা বলে ।
Q 20.
যুক্তি ও যুক্তির আকার এর মধ্যে সম্পর্ক কি ?
Ans- একটি যুক্তি হলো
তার নির্দিষ্ট যুক্তি আকারের নিবেশন দৃষ্টান্ত।
D
Valo hoyeche