সপ্তম শতকে উত্তর ভারতের কনৌজের গুরুত্ব কি ছিল ? কনৌজের গুরুপ্ত বৃদ্ধির কারন কী ছিল ? Kanauj | ClassGhar |

 

সপ্তম শতকে
উত্তর ভারতের কনৌজের গুরুত্ব কি ছিল 
?

    অথবা

সপ্তম শতকে
উত্তর ভারতের
কনৌজের গুরুপ্ত বৃদ্ধির কারন কী ছিল ?

 


          মৌর্যযুগ থেকে
গুপ্তযুগ পর্যন্ত
কনৌজ ছিল ভারতীয়
রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু

কিন্তু পরবর্তীকালে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে থেকে
কনৌজ বা কাণ্যকুব্জ হয়ে যায় ভারতীয় রাজনীতির
কেন্দ্রবিন্দ। কনৌজের গুরুত্ব প্রসঙ্গে জনৈক ঐতিহাসিক গবেষক বলেছেন
পশ্চিম এশিয়ার যোদ্ধা জাতি গুলোর কাছে
যেমন ছিল ব্যাবিলন
, টিউটনিক জাতির কাছে যেমন ছিল রোম, তেমনি অষ্টম ও নবম শতকে ভারতীয় রাজবংশগুলির কাছে
মহোদ
য়োশ্রী
কনৌজ
অধিকার ছিল চূড়ান্ত
মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব লাভের মানদন্ড

        গুপ্তদের পতনের পর কনৌজের মৌখরি বংশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই বংশের শেষ রাজা গ্রহবর্মন থানেশ্বরের
পুষ্যভূতি বংশের রাজা প্রভাকরবর্ধন এর কন্যা রাজশ্রী কে বিবাহ করলে কনৌজের শক্তি ও
মর্যাদা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়
হিউয়েন সাং এর বিবরণ অনুসারে গ্রহবর্মনের মৃত্যুতে কনৌজের সিংহাসনের
উত্তরাধিকারীহীন হয়ে পড়লে হর্ষবর্ধন কনৌজের শাসনভার গ্রহণ করেন
কিছু সময় পরে তিনি নিজেকে কনৌজ এর
সম্রাট বলে ঘোষণা করেন এবং কনৌজের
তাঁর রাজ্যের
রাজধানী
স্থাপন করেন। ফলে কনৌজের গুরুপ্ত আরও
বৃদ্ধি পায়।

        হর্ষবর্ধন
ছিলেন অসাধারণ প্রতিভা সম্পন্ন এক সমর কুশলী ও প্রজাহিতৈষী নরপতি
তিনি কনৌজের শান্তি-শৃঙ্খলা স্থাপন করেন মূলত তাঁরই চেষ্টায় কনৌজ মহোদয়শ্রী”
অভিধায় ভূষিত হয়।এবং
কনৌজ
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্র হিসেবে যথেষ্ট খ্যাতি ও মর্যাদা অর্জন করেছিল। কিন্তু
647 খ্রীষ্টাব্দ
 হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর
পর যোগ্য উত্তরাধিকারী অভাবে
কনৌজ
সাম্রাজ্য নানা বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে। এই অবস্থায় তার
মন্ত্রী অর্জুন সিংহাসন দখল করলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি
700 খ্রিস্টাব্দ
নাগাদ
কনৌজের
ইতিহাসে
যশোবর্মন নামে এক সমরকুশলী শক্তিশালী রাজার আবির্ভাব
হয়। যশোবর্মন এর আমলে
কনৌজের গুরুত্ব ও মর্যাদা বিশেষভাবে বৃদ্ধি
পায়
তিনি সম্ভবত আরব আক্রমণ থেকে কোন কনৌজকে রক্ষা করেছিলেন

        কনৌজের সামরিক
ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব ছিল যথেষ্ট
সমতলে না হয়ে উঁচু স্থানে অবস্থিত
হওয়ার ফলে
কনৌজের সামরিক গুরুত্ব
আরো বৃদ্ধি পায়
তাছাড়া গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চলে ঠিক মধ্যভাগে অবস্থিত হওয়ায় কনৌজের সেনাবাহিনী স্থল ও জলপথে
বহুদূর পর্যন্ত প্রভাব বজায় রাখতে পারত। কনৌজের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কম ছিলনা
। কনৌজের নিকটবর্তী অঞ্চলগুলি ছিল অর্থনৈতিক দিক
থেকে সমৃদ্ধ
আদর্শ কৃষিভূমি
হওয়ার পাশাপাশি
কনৌজ ছিল একটি বিখ্যাত বাণিজ্যকেন্দ্র। এছাড়া এখানে গাঙ্গেয়
উপত্যকায় বিস্তীর্ণ উর্বর
কৃষিজমি
ছিল
 

        হর্ষের
স্মৃতিবিজড়িত কনৌজের মর্যাদা ও বহুবিধ গুরুপ্তের কারণে অষ্টম ও নবম শতকে ভারতীয়
রাজবংশগুলির কাছে মহোদ
য়োশ্রী
কনৌজের উপর অধিকার স্থাপন
ছিল চূড়ান্ত মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব লাভের মানদন্ড। তাছাড়া কনৌজ
যার দখলে থাকবে তিনি কনৌজের উপর উর্বর ভূমি এবং
তা থেকে আহূত সম্পদের অধিকারী হবেন

এইসব নানা কারণে বিভিন্ন
রাজশক্তি কনৌজের
উপর আধিপত্য স্থাপন করতে সচেষ্ট হন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top