“নইলে ছন্দ মেলে না, ইতিহাসের পদটা
খোঁড়া হয়েই থাকে”- ছন্দ কি? কী নইলে ছন্দ মেলে না? ইতিহাসের পদটা কিভাবে খোঁড়া হয়ে থাকে?
অথবা
উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
চিন্তাবিদ রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের “লিপিকা” গ্রন্থ থেকে সংকলিত “কর্তার ভূত” নামক রূপক
রচনা থেকে উদ্ধৃত তাৎপর্যপূর্ণ অংশটি নেওয়া হয়েছে।
কাব্য- কবিতাকে সৌন্দর্যময় ও শ্রুতি মধুর করে তোলে যে
বহিরঙ্গিক মণ্ডনকলা তার মধ্যে অন্যতম হলো ছন্দ। যে সুমিত ও লালিত পদ স্থাপনার
মাধ্যমে কাব্য কবিতায় ধ্বনি তরঙ্গের সৃষ্টি হয় তাকে বলে ছন্দ।
• ছন্দ হল কাব্য কবিতার বা ছড়ার বহিরঙ্গিক সৌন্দর্য বা
শ্রুতিমাধু্র্যের দিক। শুধুমাত্র একটি চরণ নয় তা বিস্তৃত বা সজ্জিত থাকে একাধিক
চরণ,
স্তবক এমনকি সমগ্র কবিতা জুড়ে। এতে থাকে পদান্তিক, পর্বান্তিক বা চরণান্তিক মিল।তাই কাব্য বা কবিতার কয়েকটি
পদ বা একটি চরণ পাঠ করলে ছন্দ অনুভূত হয় না। ছন্দ সুষমা লাভের জন্য কয়েকটি
পংক্তি/চরণ বা সমগ্র কবিতাটি পাঠ করতে হয়। নইলে ছন্দ মেলে না। লেখক একটি প্রাচীন
লোকছড়ার উল্লেখ করে দেখিয়েছেন- “খোকা ঘুমোলো পাড়া জুড়োলো”। এই
পংক্তির পূর্বান্তিক মিল থাকলেও চরণান্তিক মিল অনুভব করা যায়নি। এর সঙ্গে
“বর্গী এলো দেশে” বা তার পরের পংক্তি “বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা
দেব কিসে”? পাঠ না করলে পরিপূর্ণ ছন্দ অনুভূত
হয় না বা মেলেনা।
•
অতীতের ঘটে যাওয়া ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ লিপিবদ্ধ রূপই হল
ইতিহাস। সাহিত্য সমকালীন ইতিহাস এর একটি উপাদান। অর্থাৎ সাহিত্যের মধ্যে নিহিত
থাকে সমকালীন ইতিহাস। তবে সে ইতিহাস অনুধাবন করতে হলে সমগ্র সাহিত্যকর্মটি পাঠ
করতে হয়। কারণ দু-একটা পদ বা পংক্তিতে নয়। ইতিহাস জড়িয়ে থাকে সমগ্র
সাহিত্যকর্মটি জুড়ে। তাই তার কোনো একটি খন্ডিত অংশ পাঠ করলে সমগ্র ইতিহাস জানা
যায় না,তা হয় খন্ডিত বা বিকৃত ইতিহাস। খোঁড়া অর্থাৎ বিকলাঙ্গ বা
বিকৃত দেহ।বিকলাঙ্গ বা বিকৃত দেহের মানব যেমন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক মানবের মহিমা
সম্পূর্ণ হতে পারে না, তেমনি খন্ডিত
ইতিহাসও সম্পূর্ণ ইতিহাসের সত্য মহিমা প্রদান করতে পারে না। তা খোঁড়া বা
অসম্পূর্ণ বা বিকৃত হয়ে থাকে। রচনাটিতে ব্যবহৃত লোকছড়ার লেখক দেখিয়েছেন শুধু
খোকা ঘুমোলো পাড়া জুড়োলো অংশে তৎকালীন শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার পরিচয় মিললেও
যখনই পরের অংশ “বর্গী এলো দেশে” বা “বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা
দেব কিসে” অংশটি পাঠ করা হয় তখন এই বিদেশী শাসন-শোষণ জর্জরিত দেশের সংকটময়
পরিস্থিতি ফুটে ওঠে। বেরিয়ে আসে প্রকৃত ইতিহাস। তাই সম্পূর্ণ ছড়াটি পাঠ না করলে
ইতিহাসের পদটা বিকৃত বা খোঁড়া হয়েই থাকে।
- “তারা বলে ভয় করে যে কর্তা”- কারা এ কথা বলে? তাদের কিসের ভয়? কর্তা জবাবে কি বলেন?
- কর্তার ভূত কি নিছক ভূতের গল্প নাকি রাজনৈতিক রুপককাহিনী আলোচনা করো |
- গুরু নাটকে গুরুর স্বরূপ বিশ্লেষণ কর
- “তেলেনাপোতা আবিষ্কার” বাস্তবতার ছাঁচে ঢালা শকুন্তলা কাহিনী বিচার করো |
- “তেলেনাপোতা আবিষ্কার” গল্পের রোমান্টিকতা ও বাস্তবতার টানাপোড়েন নিয়ে আলোচনা করো
- “ডাকাতের মা” গল্পের সমাজচিত্র বর্ণনা |
- “বাড়ির কাছে আরশিনগর” কবিতায় পড়শীর স্বরূপ আলোচনা করো |
- “বাড়ির কাছে আরশিনগর” কবিতার ভাববস্তু আলোচনা করো
- “বাড়ির কাছে আরশিনগর” কবিতায় বাউল সাধন তত্ত্ব আলোচনা করো |
- নীলধ্বজের চরিত্র আলোচনা করো