বাংলা ভাষার উৎপত্তি সরলপথরেখা আলোচনা কর।

বাংলা ভাষার
উৎপত্তি সরলপথরেখা

 

       ভাষা নিয়ত পরিবর্তনশীল। এই
পরিবর্তনের ধারায় সৃষ্টি হয়েছে বাংলা ভাষাসহ নব্য ভারতীয় আর্যভাষাগুলি। এখন
আমাদের আলোচ্য বাংলা ভাষার উৎপত্তির সরল পথ।

         পৃথিবীর প্রাচীন ১২টি ভাষা বংশের অন্যতম হলো
ইন্দো-ইউরোপীয়। ইন্দো-ইউরোপীয়ের ৯টি শাখার একটি হলো ইন্দো-ইরানীয়। আনুমানিক
১৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে ইন্দো-ইরানীয়ের একটি জনগোষ্ঠী ভারতে প্রবেশ করে। তাদের
ভাষাই ভারতীয় আর্যভাষা।

 

       ভারতীয় আর্য ভাষার প্রথম
স্তর হল প্রাচীন ভারতীয় আর্য। এই স্তরে দুটি ভাষার নিদর্শন পাওয়া যায়- বৈদিক
এবং সংস্কৃত ভাষা। তবে সংস্কৃতের পাশাপাশি এর একটি কথ্য রূপ ও প্রচলিত ছিল।

         এই কথ্যরূপটি ভারতীয় আর্য ভাষার দ্বিতীয় স্তর অর্থাৎ
মধ্যভারতীয় আর্যে এসে প্রাকৃত ভাষার রূপ নেয়।আনুমানিক ১০০-৬০০ খ্রিস্টাব্দের
মধ্যে এই প্রাকৃত ভাষার অঞ্চল ভেদে পাঁচটি রূপ দেখা যায়- মাগধী
, অর্ধমাগধী, পৈশাচী, শৌরসেনী এবং মহারাষ্ট্রী প্রাকৃত।

 

        এই প্রাকৃত ভাষা আবার লোকমুখে বিকৃত হয়ে অপভ্রংশের রূপ
নেয়। এভাবে মাগধী প্রাকৃত থেকে জন্ম হয় মাগধী অপভ্রংশ অবহটঠ্।

         কালক্রমে মধ্য ভারতীয় আর্যের স্তর অতিক্রম করে মাগধী
অপভ্রংশের অঞ্চল ভেদে দুটি রূপ বা শাখা গড়ে ওঠে- পূর্বী এবং পশ্চিমা।

 

        এই পূর্বী রূপ থেকেই বিবর্তনের মাধ্যমে জন্ম নেয় বঙ্গ
অসমিয়া ও ওড়িয়া ভাষা। পরে বঙ্গ অসমিয়া দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে অসমীয়া এবং
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা ভাষার জন্ম হয়।

         এভাবে বহু পথ অতিক্রম করে বহু রূপ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে
আনুমানিক ৯০০খ্রিস্টাব্দে বাংলা ভাষার জন্ম হয়। যার প্রাচীনতম নিদর্শন মেলে
“চর্যাপদ”- এ।

 



1 thought on “বাংলা ভাষার উৎপত্তি সরলপথরেখা আলোচনা কর।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top