“মহুয়ার দেশ” কবিতায় কবি মহুয়ার দেশের যে চিত্র অঙ্কন করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখ | Bangla Note PDF | ClassGhar |

মহুয়ার দেশ কবিতায় কবি মহুয়ার দেশের যে চিত্র অঙ্কন করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখ

      সমর সেন মুখ্যত নাগরিক মধ্যবিত্ত জীবনের অবক্ষয়ের
কবি। নগরজীবনের যান্ত্রিকতা, দূষণ আর অবসাদে বিধ্বস্ত কবি তার যৌবনের উপবন সাঁওতাল
পরগনার সুনির্মল ছায়াঘেরা প্রকৃতির মধ্যে দুদন্ড শান্তি পেতে চেয়েছেন ।সেই প্রসঙ্গেই
কবিতায় উঠে এসেছে মহুয়ার দেশের কথা।  

        কবির কাছে মহুয়ার দেশ ছিল তাঁর স্বপ্নের
দেশ ,যা তাকে অবসাদ থেকে মুক্তি দেয়। শান্তি দেয়। তাই অনেক দূরে হলেও কবির কাছে তা
“মেঘ-মদির”। তার আকাঙ্ক্ষার উচ্ছ্বসিত প্রকাশ –

“অনেক অনেক দূরে আছে মেঘ মদির মহুয়ার দেশ,”

        এরপরই তিনি সেদেশের বর্ণনায় মনোনিবেশ করেছেন।
কবির স্বপ্নের সে মহুয়ার দেশ এর প্রকৃতি নির্মল । অনাবিল তার সৌন্দর্য ।সে অবাধে মেলে
দিয়েছে  নিজেকে ।ঢেলে দিয়েছে তার স্নেহ। তাই
একরাশ স্নিগ্ধতা তার মেঘ মদির আকাশে ।তার পথের দু’ধারে মাথা তুলে দাঁড়ানো দেবদারুর
ছায়া। নিবিড় অরণ্যানী বেষ্টিত সে দেশ মনের গভীরে রহস্যময়তার সঞ্চার করে ।সেখানে
রাত্রি নির্জন, নিস্তব্ধ ।দূর সমুদ্রের জল কল্লোল 
রাতের সে নির্জন নিঃসঙ্গতাকে আলোড়িত করে ।মহুয়া ফুলের গন্ধ আর স্পর্শ  তাকে নিবিড় ভাবে ঘিরে থাকে সর্বক্ষণ। যে দেশ যে
ক্লান্তি হরনি ,শান্তি দায়িনী তা কবির  প্রত্যাশা
থেকেই বোঝা যায় –

“আমার ক্লান্তির উপরে ঝরুক মহুয়া-ফুল,

নামুক মহুয়ার গন্ধ ।”

                      কিন্তু পরক্ষনেই কবি মহুয়ার দেশের এক ভিন্ন চিত্র
এঁকেছেন ।যা নির্মম এবং ভয়ঙ্কর। মানুষের লোভ আর বর্বরতায়
  ধ্বংস হয়েছে তার অনাবিল সৌন্দর্য আর স্নিগ্ধতা। এখন
সে দেশ “অসহ্য ,নিবিড় অন্ধকারে “আচ্ছন্ন। লোভী মানুষ সেখানে সন্ধান করেছে
কয়লাখনি। বড় বড় যন্ত্র বসিয়ে শুরু হয়েছে কয়লা তোলার কাজ। মহুয়ার দেশ এর আকাশ
বাতাস কম্পিত তারই গভীর বিশাল শব্দে ।সেখানে শিশির ভেজা সকাল আসে। কিন্তু ফিরে আসেনা
প্রাণোচ্ছলতা। প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা আরণ্যক সন্তানরা আজ খনি শ্রমিক। সবুজ
  সকালেও তাদের চোখ নিদ্রাহীন। শরীর ধুলোর কলঙ্ক মাখা।
জীবন দুঃস্বপ্ন গ্রস্ত। এভাবেই যন্ত্রসভ্যতার আঘাতেই মহুয়ার দেশ এর বিবর্তন এর চিত্র
  রূপটি ফুটে উঠেছে সমর সেনের “মহুয়ার দেশ”
কবিতায়।


Download Pdf

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *