[PDF] অনেক ভেবেচিন্তে আমরা একটা প্যাচ বের করেছি – প্যাচটি কি? Class Xii Bengali Note | ClassGhar |

 


“অনেক ভেবেচিন্তে আমরা একটা প্যাচ
বের করেছি”- প্যাচটি কি? তা কিভাবে বের করা হয়েছিল? 

অথবা “বুদ্ধিটা কি করে এলো তা
বলি”- বুদ্ধি বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তা কেমন করে এসেছিল?

 

      বাংলা নাট্য আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব নট,
নাট্যকার ও নাট্যপরিচালক শম্ভু মিত্রের “বিভাব” নাটক থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া
হয়েছে। নাটকের সূচনায় গ্রুপ থিয়েটারের নানা সমস্যা এবং তা সমাধানের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
অর্থ সংকটের কারণে যখন ভালো মঞ্চ, আলো, ঝালর, সিনসিনারি-কিছুই নেই,তখন অনেক ভেবেচিন্তে
তিনি বাংলা নাটকে নতুন আঙ্গিক বা প্রয়োগ কৌশল সূচনা করলেন। যেখানে শুধু একটা প্লাটফর্ম
হলেই চলবে। সিনসিনারি, দরজা-জানলা, টেবিল-চেয়ার কিছুই দরকার হবে না। বুদ্ধি বা প্যাচ
বলতে নাটক অভিনয়ের এই আশ্চর্য আঙ্গিক বা প্রয়োগ কৌশলেক বোঝানো হয়েছে।

      ভালো মন্ত্র বা সিনসিনারি ছাড়াই যে নাট্যাভিনয়
রীতি, দেশি-বিদেশি নাট্য ঐতিহ্যের গভীরে ছিল তার শিকড়। সেখান থেকেই নাট্যকার এই রীতির
সন্ধান এবং প্রয়োগ প্রেরণা লাভ করেছিলেন।

          এক পুরানো বাংলা
নাটকে লেখা ছিল “রাজা রথারোহনম নাটয়তি”। অর্থাৎ রাজা রথে চড়ার ভঙ্গি করলেন।
সেখানে রথ নেই, ঘোড়া নেই শুধু ভঙ্গির মাধ্যমেই রথে চড়ার বিষয়টি দর্শকদের বোঝানো
হয়েছিল।

         
 
ওড়িয়া যাত্রাপালায় রাজা  দূতকে বললেন- “তমে ঘোড়া নেই করি চঞ্চল
খবর নেই আসিবি”। সেখানেও ঘোড়া অনুপস্থিত।দূত দুপায়ের মধ্যে একটি লাঠি গলিয়ে
হেট হেট করতে করতে প্রস্থান এবং পুনরাগমন করে ঘোড়ায় চড়ার ব্যাপারটি বুঝিয়ে দিলেন।

         
মারাঠি
তামাশাতে এক চাষী জমিদারের কাছে ব্যর্থ মিনতি করে মঞ্চে তক্তার
  উপর কয়েকবার ঘুরে বুঝিয়ে দিলেন তিনি গ্রাম
ঘুরে মন্দিরে এলেন এবং সেখানে মন্দিরে নিজের দুঃখের কথা নিবেদন করতে লাগলেন এবং জমিদার
একটা দাড়ি গোঁফ এটে পুরোহিতের অভিনয় করতে লাগলেন।

         এসব ঘটনায় নাট্যকার
উল্লসিত এবং অনুপ্রাণিত হলেও লোকে এসব মেনে নেবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন জাগলো মনে। এরপর
তিনি বিখ্যাত রুশ চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইনের রচনা পড়ে
  দেখলেন যে তিনি জাপানি কাবুকি থিয়েটারে
এ ধরনের ভঙ্গির ব্যবহারে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। সেখানে দুর্গ দারের আকৃতি পাল্টে
অর্থাৎ perspective
  তৈরি করে নাইটের
বহুদূর গমনকে বোঝালেন অথবা দুই যোদ্ধার কাল্পনিক লড়াই এবং এক যোদ্ধার মৃত্যু দৃশ্যে
দেখা গেল স্বামীর মৃতদেহ আঁকড়ে সদ্য বিধবা স্ত্রী যখন কাঁদছেন,
  তখন মৃত সৈনিক উঠে পুটপুট করে চলে গেল। সেখানেও
দর্শক কিছু মনে করে না। কারণ সেখানে স্ত্রীর দুঃখটাই প্রধান, স্বামী অবান্তর।

                 এসব প্রত্যক্ষ ও
পরোক্ষ নানা অভিজ্ঞতা থেকেই নাট্যকার শম্ভু মিত্র সেই নতুন প্যাচ বা বুদ্ধির কথা ভেবেছিলেন
এবং নাটকে তা প্রয়োগ করেছিলেন।

Download PDF

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top