একাদশ শ্রেণীর ভারতীয় দর্শনের “ন্যায় দর্শনের অনুমান সম্পর্কে বক্তব্য” অধ্যায়ের সমস্ত প্রশ্ন-উত্তর।
ন্যায় দর্শনের অনুমান সম্পর্কে বক্তব্য
১. ব্যাপ্তি কাকে বলে?
উঃ- অনুমানে হেতু পদের সঙ্গে সাধ্য পদের নিয়ত ও সাহচর্য নিয়মকে ব্যাপ্তি বলে।
২. ব্যাপ্য ও ব্যাপক কি?
উঃ- যে দুটি পদার্থ বা বিষয়ের মধ্যে ব্যাপ্তি সম্বন্ধ থাকে তাদের একটিকে ব্যাপ্য এবং অন্যটিকে ব্যাপক বলে।
৩. “ব্যপ্তি হল উপাধিহীন, নিয়ত ও অবব্যাহিচারী সম্বন্ধ”-এখানে ” উপাধি”, “নিয়ত” ও “অব্যাহিচারী” শব্দের অর্থ কি?
উঃ- উপাধি কথার অর্থ হল শর্ত। নিয়ত কথার অর্থ সতত বা সর্বদা। অব্যাহিচারী কথার অর্থ ব্যতিক্রমহীন।
৪. বৌদ্ধমতে ব্যাপ্তিজ্ঞান কয়টি নীতির উপর নির্ভরশীল?
উঃ- দুইটি।যথা- তাদাত্ম নীতি ও কার্যকারণ নীতি।
৫. ন্যায় মতে ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি?
উঃ- দুই প্রকার। যথা- সমব্যপ্তি ও বিষম ব্যাপ্তি।
৬. সমব্যপ্তি কাকে বলে?
উঃ- যে ব্যাপ্তিতে ব্যাপ্য ও ব্যাপক এর সম্বন্ধ সমান তাকে সমব্যপ্তি বলে।
৭. বিষম ব্যাপ্তি কাকে বলে?
উঃ- যে ব্যাপ্তিতে ব্যাপ্য ও ব্যাপক এর সম্বন্ধ অসমান বোঝায়
তাকে বিষমব্যাপ্তি বলে।
৮. ব্যপ্তি প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন স্তরগুলি কি কি?
উঃ- 6 প্রকার। যথা- অন্বয়, ব্যতিরেক,ব্যভিচারাগ্রহ, উপাধি নিরাস, তর্ক ও সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ।
৭. অন্বয় কাকে বলে?
উঃ- দুটি বিষয়ের মধ্যে একত্র উপস্থিতির মিল দেখে তাদের মধ্যে ব্যাপ্তি সম্বন্ধ আছে বলা যায়।
৮. অন্বয় কথার অর্থ কি?
উঃ- মিল বা সাদৃশ্য।
৯. ব্যতিরেক কথার অর্থ কি?
উঃ- ব্যতীত বা ছাড়া।
১০. ব্যতিরেক কাকে বলে?
উঃ- দুটি বিষয়ের মধ্যে একত্র অনুপস্থিতির মিল দেখে তাদের ব্যাপ্তি সম্বন্ধ আছে বলা যায়।
১১.ব্যভিচারাগ্রহ কাকে বলে?
উঃ- দুটি বিষয়ের মধ্যে একটি উপস্থিত আছে এবং অন্যটি অনুপস্থিত এমন বিপরীত দৃষ্টান্ত যদি না দেখি তাহলে তাদের মধ্যে ব্যপ্তি সম্বন্ধ আছে বলা যায়।
১২. ব্যভিচার কথার অর্থ কি?
উঃ- বিপরীত দৃষ্টান্ত।
১৩. আগ্রহ কথার অর্থ কি?
উঃ- অদর্শন বা না দেখা।
১৪. উপাধি নিরাস বলতে কী বোঝো?
উঃ- দুটি বিষয়ের মধ্যে ব্যাপ্তি সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠার শর্তহীন বোঝায়।
১৫.উপাধি কথার অর্থ কি?
উঃ- শর্ত।
১৬. নিরাস কথার অর্থ কি?
উঃ- নিরসন।
১৭. উপাধি নিরাস কি?
উঃ- শর্ত না থাকাকে বোঝায়।
১৮. ভূয়ো দর্শন কাকে বলে?
উঃ- দুটি বিষয়ের একত্র উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির মিল বারবার দেখে তাদের ব্যপ্তি সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠা করা যায় যাকে ভূয়ো দর্শন বলে।
১৯. তর্ক কি?
উঃ- তর্ক হলো মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের বিরুদ্ধে বচনকে অসত্য প্রমাণ করে মূল বচনের সত্যতা প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি।
২০. সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?
উঃ- যখন কোনো বস্তু বা বিষয়কে দেখে তার জাতির প্রত্যক্ষণ হয় তাকে সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ বলে।
২১. সামান্য কথার অর্থ কি?
উঃ- সমগ্র জাতি।
২২.ন্যায় মতে অনুমান কয় প্রকার ও কি কি?
উঃ- দুই প্রকার। যথা- স্বার্থানুমান ও পরার্থানুমান।
২৩. স্বার্থানুমান কাকে বলে?
উঃ- নিজ জ্ঞানলাভের প্রয়োজনে যে অনুমান করা হয় তাকে স্বার্থানুমান বলে।
২৪. স্বার্থানুমানের কয়টি অবয়ব বা অংশ থাকে?
উঃ- তিনটি। যথা- প্রধান আশ্রয় বাক্য, অপ্রধান আশ্রয় বাক্য ও সিদ্ধান্ত।
২৫. ত্রিঅবয়বী ন্যায় কাকে বলে?
উঃ- স্বার্থানুমানকে। কারণ এখানে তিনটি অবয়ব থাকে।
২৬. পরার্থানুমান কাকে বলে?
উঃ- নিজ জ্ঞান লাভের বিষয়টি অন্যকে বোঝানোর প্রয়োজনে যে অনুমান করা হয়।
২৭. পরার্থানুমানের কয়টি অবয়ব থাকে ও কি কি?
উঃ- পাঁচটি অবয়ব থাকে। যথা- প্রতিজ্ঞা, হেতু,উদাহরণ,উপনয় ও নিগমন বা সিদ্ধান্ত।
২৮. প্রতিজ্ঞা বাক্যের উদাহরণ দাও।
উঃ- পর্বতটি হয় বহ্নিমান।
২৯. হেতু বাক্যের উদাহরণ দাও।
উঃ- পরবর্তী হয় ধূমবান।
৩০. ন্যায় দর্শন অনুযায়ী “মান” কথার অর্থ কি?
উঃ- জ্ঞান।
৩১. ন্যায় দর্শন অনুযায়ী “অনু” শব্দের অর্থ কি?
উঃ- পরবর্তী।
৩২. ন্যায় দর্শন অনুযায়ী “মিতি” শব্দের অর্থ কি?
উঃ- জ্ঞান।
৩৩. অনুমিতি শব্দের আক্ষরিক অর্থ কি?
উঃ- পশ্চাদ্বর্তী জ্ঞান।
৩৪. ব্যাপ্তি জ্ঞান যে জ্ঞানের করণ তাকে কি বলে?
উঃ- অনুমিতি।
৩৫. অন্য জ্ঞানের মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্ঞানকে কি বলা হয়?
উঃ- অনুমিতি।
৩৬. “দূরে পাহাড়ে ধূম আছে,সুতরাং সেখানে আগুন আছে”- এটি কি জ্ঞান?
উঃ- অনুমান।
৩৭. পক্ষ কাকে বলে?
উঃ- যে পদার্থে সাধ্যের উপস্থিতি সম্পর্কে সংশয় থাকে।
৩৮. কোনো কিছুর অনুমান করা হয় কোন অধিকরণে?
উঃ- পক্ষ।
৩৯. যেখানে সাধ্যের সিদ্ধি করা হয় সেটি কি?
উঃ- পক্ষ।
৪০. যে পদার্থকে অনুমান করা হয় তাকে কি বলে?
উঃ- সাধ্য।
৪১. সাধ্য কাকে বলে?
উঃ- যে পদার্থের দ্বারা পক্ষে সাধ্যকে অনুমান করা হয়।
৪২. “সন্ধিগ্ধসাধ্য” কথার অর্থ কি?
উঃ- যে সাধ্য সংশয়ের বিষয়।
৪৩. যে পদার্থের দ্বারা পক্ষে সাধ্যকে অনুমান করা হয় তাকে কি বলে?
উঃ- হেতু।
৪৪. হেতুর অপর নাম কি?
উঃ- লিঙ্গ।
৪৫. অনুমানের কোন পদকে সাধন বলা হয়?
উঃ- হেতু পদকে।
৪৬. হেতু কাকে বলে?
উঃ- যে পদার্থের দ্বারা পক্ষে সাধ্যকে অনুমান করা হয়।
৪৭. পক্ষসত্ত্ব কি?
উঃ- পক্ষে হেতু থাকার ধর্মকে বোঝায়।
৪৮. ন্যায় দর্শন অনুযায়ী যেখানে সাধ্যের নিশ্চিত জ্ঞান থাকে তাকে কি বলা হয়?
উঃ- স্বপক্ষ।
৪৯. ন্যায় দর্শন অনুযায়ী অনুমানের যে স্থানে সাধ্যের অভাবের নিশ্চিত জ্ঞান থাকে তাকে কি বলা হয়?
উঃ- বিপক্ষ।
৫০. ন্যায় মতে সৎ হেতুর বৈশিষ্ট্য কয়টি?
উঃ- পাঁচটি।
৫১. ন্যায় মতে বিপক্ষে হেতুর অনুপস্থিতিকে কি বলে?
উঃ- বিপক্ষাসত্ত্ব।
৫২. হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মকে কি বলে?
উঃ- ব্যাপ্তি।
৫৩. হেতু ও সাধ্যের মধ্যে নিয়ত ও সমানাধিকরনের সম্পর্ককে কি বলে!
উঃ- ব্যপ্তি।
৫৪. বহ্নি ও ধুমের ব্যাপ্তি সম্বন্ধটি কি ধরনের ব্যাপ্তির উদাহরণ?
উঃ- উপাধিযুক্ত ব্যপ্তি।
৫৫. অসমব্যাপক দুটি পদার্থের মধ্যে যে ব্যপ্তি সম্বন্ধ তাকে কি বলে?
উঃ- অসমব্যাপ্তি।
৫৬. ব্যাপ্তিগ্রহ কি?
উঃ- ব্যাপ্তি লাভের জ্ঞান।
৫৭. ব্যাপ্তি নির্ণয়ের প্রথম স্তর কোনটি?
উঃ- অন্বয়।
৫৮. দুটি বিষয়ের একত্র অনুপস্থিতির ঐক্যকে কি বলা হয়?
উঃ- ব্যতিরেক।
৫৯. ব্যাপ্তি নির্ণয়ের তৃতীয় স্তর কোনটি?
উঃ- ব্যভিচারাগ্রহ।
৬০. দুটি পদার্থের সহচার বারবার দর্শন করাকে কি বলা হয়?
উঃ- ভূয়ো দর্শন।
৬১. পরামর্শ কথার অর্থ কি?
উঃ- ব্যাপ্তিবিশিষ্ট পক্ষধর্মতা জ্ঞান।
৬২. ন্যায় মতে পক্ষে হেতুর প্রত্যক্ষ বা অবস্থানকে কি বলা হয়?
উঃ- পক্ষধর্মতা।
৬৩. যে অনুমিতিকে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না সেটি কোনটি?
উঃ- পরার্থানুমিতি।
৬৪. পঞ্চাবয়বী ন্যায় মেনেছেন কারা?
উঃ- নৈয়ায়িকরা।
৬৫. উদাহরণ কাকে বলে?
উঃ- যে বাক্য ব্যপ্তি প্রতিপাদন করে।
৬৬. যে বাক্য দৃষ্টান্তসহ ব্যপ্তি বা সাহচর্যের নিয়ম জ্ঞাপন করে তাকে কি বলা হয়?
উঃ- উদাহরণ।
৬৭. যে বাক্য ব্যপ্তিবিশিষ্ট হেতু বা লিঙ্গ প্রতিপাদন করে তাকে কি বলে?
উঃ- উপনয়।
৬৮. পঞ্চাবয়বী ন্যায়ের যে বাক্যে ব্যাপ্তি সম্বন্ধ প্রতিপাদন করা হয় তাকে কি বলা হয়?
উঃ- উদাহরণ বাক্য।
৬৯. যে বাক্য সাধ্যবিশিষ্ট পক্ষের প্রতিপাদক তাকে কি বলে?
উঃ- নিগমন।
৭০. পরার্থানুমানে সাধ্যকে প্রমাণ করে কোন বাক্য?
উঃ- নিগমন।
৭১. সাধ্য ব্যাপ্য হেতু পক্ষে আছে, এটি উল্লেখ থাকে পরার্থানুমানের কোন বাক্যে?
উঃ- উপনয়।