সংগীতে সলিল চৌধুরীর অবদান বর্ণনা করো | Note PDF Download |

সংগীতে সলিল চৌধুরীর অবদান বর্ণনা করো

সংগীতে সলিল চৌধুরীর অবদান

 

    কথা আর সুরের অপূর্ব
জাদুতে অযুত সংগীত পিপাসু মনকে মুগ্ধ করে মানুষের মনে আপন চিরন্তন আসনখানি ছিনিয়ে
নিয়েছেন যিনি তিনি বিশ শতকের অবিস্মরণীয় কথাকার ও সুরকার সলিল চৌধুরী (১৯২৩-১৯৯৫)।

             সলিল চৌধুরী একাধারে গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। তিনি প্রথম জীবনে
ভারতীয় গণনাট্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর গানে সমকালীন রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের ছাপ
লক্ষ্য করা যায়। 1949 এ “পরিবর্তন” ছবির সংগীত পরিচালক রূপে আত্মপ্রকাশ
ঘটে। বাংলা সহ বিভিন্ন ভাষার ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। প্রায় 75 টি হিন্দি,
  40 টি বাংলা, 26 টি মালয়ালম এবং বেশ কিছু মারাঠি, তামিল, তেলেগু, কন্নড়,
গুজরাটি,ওড়িয়া এবং অসমিয়া ছবি তাঁর নিপুণ সঙ্গীত পরিচালনায় সার্থক হয়ে উঠেছে।
এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য – “বাঁশেরকেল্লা”, “গঙ্গা”, “কিনু
গোয়ালার গলি”, “লাল পাথর”, “রক্তাক্ত বাংলা”, “জাগতে
রহো”, “মুশাফির”, “দো বিঘা জমিন”, “চেম্মিন” প্রভৃতি।

      

সংগীত সাধনার ক্ষেত্রে
তাঁর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ে –

    তাঁর গানে
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বাংলা গানে পাশ্চাত্য রীতির ব্যবহারে
তিনি অসামান্য।

       “বিচারপতি”, “রানার”, “অবাক-পৃথিবী” প্রভৃতি
গণসঙ্গীতের ও সার্থক স্রষ্টা তিনি।

         তিনিই প্রথম কয়্যার সংগীতের প্রবর্তক। বম্বে ইয়ুথ কয়্যার তিনি প্রতিষ্ঠা
করেন এবং পলিফোনিক কয়্যার বা বহুস্বর পদ্ধতি চালু করেন।

     “ও আলোর পথযাত্রী”, “ঢেউ উঠছে কারা টুটছে”,
“হেই সামালো” প্রভৃতি গণসঙ্গীতে কোরাস গায়ণ পদ্ধতি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা
করেছেন।

 

          “উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা”, “আজ নয় গুনগুন গুঞ্জন প্রেমের”,
“সুরের এই ঝর ঝর ঝরনা” প্রভৃতি গানে কোথাও পাশ্চাত্য ক্রিসক্রস গতি বা প্যাটার্ন,
কোথাও ভোকাল হারমনি, কোথাও বা কাউন্টার পয়েন্ট সফলভাবে প্রয়োগ করেছেন।

 

           বাংলা গানে সলিল চৌধুরীর অবদানের  যথার্থ মূল্যায়ন
এখনো হয়নি। তবে সঙ্গীত পিপাসু মানুষের কাছে আজও তাঁর গানগুলির অসামান্য জনপ্রিয়তা
ও কদর তাঁর অসামান্য প্রতিভাকেই স্মরণ করায়।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *