সংস্কৃতকে বাংলা ভাষার জননী বলা যুক্তি
সাধারণভাবে সংস্কৃত ভাষাকেই
বাংলা ভাষার জননী বলা হয়ে থাকে। কারণ মনে করা হয় যে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ থেকে
ভারতে আগত প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার শেষ পর্বের ভাষা হল সংস্কৃত এবং তা থেকেই
প্রাকৃত ও অপভ্রংশের স্তর অতিক্রম করে বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে।
কিন্তু আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে সংস্কৃত ভাষার কোনো
বিবর্তন হয়নি। কারণ পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী ব্যাকরণের মাধ্যমে সংস্কৃত ভাষাকে কঠিন
বাঁধনে আবদ্ধ করার ফলে তা মৃত ভাষায় পরিণত হয়েছে।সেই সময়ে সাধারণ মানুষের মুখে
ভাষার যে কথ্যরূপ প্রচলিত ছিল তা বিবর্তিত হয়েই মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার স্তরে
প্রাকৃতের রূপ নেয়।পরবর্তীকালে সংস্কৃত নয় সেই প্রাকৃত ভাষারই বিবর্তন ঘটেছে।
ক্রমে অঞ্চল ভেদে প্রাকৃতের পাঁচটি রূপ গড়ে ওঠে- মাগধী, অর্থ মাগধী, পৈশাচী, শৌরসেনী এবং মহারাষ্ট্রী। এরা
প্রত্যেকেই পরিবর্তিত ও বিকৃত হয়ে পাঁচটি অপভ্রংশের রূপ নেয়। মাগধী প্রাকৃত থেকে
আগত মাগধী অপভ্রংশের পূর্বী ও পশ্চিমা- এই দুটি রূপ গড়ে ওঠে। পরে পূর্বী রূপ থেকে
বঙ্গ-অসমিয়া ও ওড়িয়া ভাষার জন্ম হয়। এই বঙ্গ অসমিয়া থেকেই কালক্রমে বাংলা ও
অসমিয়া ভাষার জন্ম হয়।
অর্থাৎ মৃত
সংস্কৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম- এ কথা যুক্তিসঙ্গত নয়। ভাষার বিবর্তনের শেষ
স্তর অপভ্রংশ তাই মাগধী অপভ্রংশ থেকেই কালক্রমে বাংলা ভাষার জন্ম। সুতরাং
ভাষাবিজ্ঞানের আধুনিক ধারণা অনুযায়ী মাগধী প্রাকৃতজাত মাগধী অপভ্রংশ ভাষাকেই
বাংলা ভাষার মাতৃস্থানীয়া ভাষা বলা অধিকতর যুক্তিসঙ্গত। ভাষাচার্য সুনীতিকুমার
চট্টোপাধ্যায় এবং সুকুমার সেন এই মতই প্রকাশ করেছেন। সংস্কৃতের সঙ্গে বাংলার যোগ
বহুদূরবর্তী। পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ভাষায় সংস্কৃত বাংলা ভাষার-” অতি-
অতি- অতি- অতি- অতি বৃদ্ধ পিতামহী”।
- “চার ভাষাবংশের দেশ ভারত”- আলোচনা করো
- বাংলা ভাষার তিনটি পর্যায় বা স্তর আলোচনা করো |
- শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের সমাজচিত্র বা সামাজিকতা বর্ণনা করো
- রামায়ণের শ্রেষ্ঠ কবি হিসাবে কৃত্তিবাস ওঝার কৃতিত্ব
- কাশীরাম দাসের কৃতিত্ব
- মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কে? তাঁর কৃতিত্বের মূল্যায়ন করো
- চর্যাপদের বিষয়বস্তু কি?
- চর্যাপদের সমাজচিত্র বর্ণনা দাও
- চর্যাপদ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব আলোচনা করো
- চর্যাপদের সাহিত্যমূল্য অথবা কাব্যমূল্য বিচার করো