এথেন্স ও স্পার্টার
নাগরিকত্বের লাভের পার্থক্য লেখ।
Or
গ্ৰিক সমাজে নাগরিকত্ত্ব
লাভের শর্তগুলি আলোচনা কর।
গ্রিক নগর রাষ্ট্রের মধ্যে প্রধান দুটি নগর হল এথেন্স ও স্পাটা। এক্ষেত্রে
এথেন্স ছিল খুব প্রগতিশীল। কিন্তু এর বিপরীত ধর্মী রাষ্ট্র হিসেবে স্পাটার উত্থান ঘটেছিল।
গ্ৰিক তথা এথেন্স ও স্পার্টার সমাজ থাকলেও নাগরিকত্ত্ব লাভের ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য
লক্ষ্য করা যায়।
এথেন্স
গ্ৰিক তথা এথেন্স এর সমগ্ৰ জনসংখ্যা একটি ক্ষুদ্র অংশ ছিল নাগরিক শ্রেনী।
তার রাজনৈতিক জীবনে অংশ গ্ৰহনের অধিকারী ছিল। এই অধিকার তারা জন্মসূত্রে লাভ করত। নাগরিক
পরিবারে জন্ম গ্রহণ না করলে নাগরিক অধিকার অর্জন ছিল অত্যন্ত কঠিন। পিতা-মাতা এথেন্সের
নাগরিক না হলে কারও পক্ষে নাগরিকত্ব লাভ করা সম্ভব হত না। সেনাবাহিনীতে অংশগ্রহণ করলেও
তাকে নাগরিকের মর্যাদা দেওয়া হতো না।
451 খ্রিস্টপূর্বাব্দ আগে মা যদি বিদেশি হতেন, সে ক্ষেত্রে এথেন্সের নাগরিকত্ত্ব
পাওয়া যেত। কিন্তু 451 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর থেকে একমাত্র যাদের পিতামাতা এথেন্সের
নাগরিক এবং বৈধ হওয়ার অধিকার দেন। এথেন্সের নাগরিকত্ত্ব পাওয়া জন্য নুন্যতম বয়স
ছিল 17 বছর। এই দুটি শর্ত পূরণ হলে ‘দেমি’ যদি সন্তুষ্ট হয় তা তাহলে তা অনুমোদনের জন্য কাউন্সিলের নিকট পাঠানোর
হত। কাউন্সিলের অনুমোদনের পর ‘দেমি’ রেজিস্ট্রির খাতায় নথিভুক্ত করা হত। এভাবে এথেন্সের
নাগরিকত্ব লাভ করা সম্ভব হত।
স্পাটা
স্পাটার নাগরিকত্ব লাভের শর্ত গুলি এর সম্পূর্ন বিপরীত।স্পাটাতে নাগরিকত্ত্ব লাভের জন্য শৈশব থেকে কঠোর নিয়ম শৃংখলার মধ্যে
দিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে হতো।এই প্রক্রিয়াকে গ্ৰিক ভাষায় বলা হত ‘Agoge’।এর মাধ্যমে
স্পার্টার তরুণ নাগরিকদের জীবন গড়ে তোলা হত, সমাজে ব্যক্তি নাগরিককে আচারন বিধি নির্ধারিত
হত এবং সারা জীবন ব্যাপী একে আদর্শ হিসেবে মেনে চলা হত।
এথেন্সের মতো স্পাটাতেও নাগরিকত্ব লাভের পূর্ব শর্ত হিসাবে পিতা-মাতার স্পাটার
নাগরিক হওয়া অত্যন্ত জরুরি বিবেচিত হত। কিন্তু নাগরিকত্ব লাভের ক্ষেত্রে বয়সের পদ্ধতি
তারতম্য ছিল। এথেন্স নাগরিকত্ত্ব পেতে হলে 17 বছর বয়স নির্ধারিত হলেও স্পাটার ক্ষেত্রে
তা ছিল 20 বছর। আবার 20 বছর বয়সে নাগরিকত্ত্ব লাভ করলেও 30 বছর বয়সে আগে ‘এফর’ পদের প্রার্থী হতে পারত না। এক্ষেত্রে
কোন রূপ কাউন্সিলের অনুমোদনের প্রয়োজন হত না। এভাবে গ্ৰিক তথা এথেন্স ও স্পাটার নাগরিকত্বের
মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।