টীকা লেখ- “শিক্ষার
ব্যপক অর্থ”
অথবা, শিক্ষার ব্যপক
অর্থ বলতে কী বোঝায় ? ব্যপক অর্থে শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
শিক্ষার ব্যপক অর্থ-
ব্যাপক অর্থে শিক্ষা হল শিক্ষার্থীর জীৱনব্যাপী এক প্রক্রিয়া যা ব্যক্তিকে নতুন
অভিজ্ঞতা অর্জনে ও পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সার্থকভাবে মানিয়ে নিতে সাহায্য
করে এবং সমাজের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের উপযোগী করে তোলে। অন্যভাবে- ব্যাপক অর্থে
শিক্ষা বলতে কোন প্রাতিষ্ঠানিক পুথিকেন্দ্রিক শিক্ষাকে বোঝায় না; বরং তা একটি
সমাজের জীবনধারার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এই শিক্ষার উদ্দেশ্য হল ব্যক্তিত্বের
পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটিয়ে ব্যক্তি ও সমাজের উন্নয়নে সহায়তা করা।
শিক্ষার ব্যাপক
বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
(১) জীৰনব্যাপী
প্রক্রিয়া : শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। শিশু পৃথিবীতে জন্ম নেওয়ার
সঙ্গে সঙ্গে এই শিক্ষা শুরু হয় এবং
আমৃত্যু চলতে থাকে।
(২) সামাজিক প্রক্রিয়া
: শিক্ষা হল সমাজ-নিয়ন্ত্রিত একটি প্রক্রিয়া। সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা শিক্ষার
মধ্যে দিয়েই বাস্তবায়িত
হয়।
(৩) ক্ৰমবিকাশের
প্রক্রিয়া : শিক্ষা শিশুর জন্মগত সামর্থ্য, অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা ও স্বতঃস্ফূর্ত
চিন্তাশক্তির ক্রমবিকাশে সাহায্য
করে।
(৪) গতিশীল এবং
পরিবর্তনশীন প্রক্রিয়া : শিক্ষা হল সেই গতিশীল প্রক্রিয়া যা সারাজীবন ধরে চলতে
থাকে। এবং সমাজের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন ঘটে।
(৫) অভিযোজন প্রক্রিয়া
: শিক্ষা শিক্ষার্থীকে তার পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনে অর্থাৎ মানিয়ে নিতে সহায়তা করে।
(৬) বহুমুখী প্রক্রিয়া
: শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পাঠক্রম, সমাজ ইত্যাদির সমন্বয়ের মাধ্যমেই শিক্ষা কার্যকরী
হয়।
{৭) শিক্ষার্থীর চাহিদা
ও প্রবণতাভিত্তিক প্রক্রিয়া : এটি শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষা। এখানে শিক্ষক বা
অভিভাবকের ইচ্ছার পরিবর্তে
শিক্ষার্থীর চাহিদা, জীবনবিকাশের স্তর, সামর্থ্য বা প্রবণতা, পছন্দ-অপছন্দ
প্রভৃতির ওপর নির্ভর করে শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
(৮) স্থায়ী প্রক্রিয়া
: এই শিক্ষা শিক্ষার্থীর বাস্তবজীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। শিক্ষার্থী নিজে
বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করে। ফলে এই শিক্ষা
শিক্ষার্থীর মধ্যে স্থায়ী হয়।