“আর ইংরেজ নেই তবু তার আগের ব্যবস্থাই বহাল আছে বক্সায়”- কোন ব্যবস্থা কেন বহাল আছে? মেঘের গায়ে জেলখানা | PDF Download |

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা নোটস PDF মেঘের গায়ে জেলখানা আরইংরেজ নেই তবু তার আগের ব্যবস্থাই বহাল আছে বক্সায়“- কোন ব্যবস্থা কেন বহাল আছে? Download free PDF.

 


“আর ইংরেজ নেই তবু তার আগের ব্যবস্থাই বহাল আছে বক্সায়”

    বক্সা
বন্দিশিবির এক বিশেষ ধরনের জেলখানা। বর্তমানে চোর,গুণ্ডা,খুনি,গাঁট কাটা নিয়ে বক্সা
জেলখানার জীবন পরিবৃত হলেও এদেশে তাদের শাসনকে সুপ্রতিষ্ঠিত ও দীর্ঘস্থায়ী করার এক
বিশেষ উদ্দেশ্যে ইংরেজরা এই জেল স্থাপন করে। কিন্তু দেশ তার সন্তানের কাছে মাতৃসমা।
সন্তানের ভালোবাসায় সে পরিপুষ্ট। তাই দেশ মায়ের শৃঙ্খলিত রূপ আর দুর্দশা মেনে নিতে
পারেনি তার অগণিত সন্তান। তারা দেশের স্বাধীনতা আর মায়ের শৃঙ্খলা মোচনের জন্য আন্দোলন
করে। আন্দোলন করে কলে- কারখানায়, খনি গর্ভে ,কৃষিক্ষেত্রে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের
উপর শোষণ- পীড়ন অত্যাচারের বিরুদ্ধে।ফলে ইংরেজের এদেশে অন্যায় ভাবে দখল ও লুণ্ঠনের
উদগ্র বাসনায়
  পড়ে ঘা। ক্ষুব্ধ ইংরেজ
দেশমাতৃকার সে সব বীর সন্তানদের বন্দি করার ব্যবস্থা করে। দেশকে ভালোবাসা ছাড়া কোনো
অপরাধই
  যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ
হয়নি- সেই বয়োবৃদ্ধ খাঁ সাহেব, নীরদ চৌধুরী, ভগ্নস্বাস্থ্য শিবশংকর মিত্র, মুক্তিযোদ্ধা
সতীশ পাকড়াশীদের। তাছাড়া বন্দি
 
করা হয়েছে বাংলার শহর ও গ্রামের অগণিত মানুষের বহু বিশ্বস্ত প্রতিনিধিকে। যারা অজয়ের
উদ্বেলিত তীরে বন্যার মুখে দাঁড়িয়ে বাঁধ বেঁধেছে ,অন্ধকার ঘরে পৌঁছে দিয়েছে উজ্জ্বল
সম্ভাবনার খবর, যারা কৃষিক্ষেত্রে কর্মীদের মনে সাহস সঞ্চার করেছে, কারখানার শ্রমিকদের
মুখে জাগিয়ে তুলেছে প্রতিবাদের ভাষা, সেই সব নেতা এবং স্বদেশপ্রেমিকদের ও বন্দি করা
হয় বক্সা জেলে। শুধুমাত্র নিজেদের শাসন কায়েম আর স্বার্থসিদ্ধির নেশায় নির্বিচারে
অন্যায় ভাবে ভারতীয় স্বদেশপ্রেমিক বীর সন্তানদের প্রিয়জনদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে
বনবাস দেবার ইংরেজ প্রবর্তিত এই ব্যবস্থায আজও বহাল আছে বক্সায়।

     দিন বদলায় আপন নিয়মে তবু পুরাতন রীতিনীতি বাঁধা পড়ে
থাকে রক্ষনশীলতার কঠিন বন্ধনে। ভারতবর্ষের চরম রক্ষণশীলতাই এর জন্য দায়ী। অথবা ভারতবাসীর
চরিত্রে সেই শক্তি সাহস নেই যা দিয়ে উৎপাটন করা যায় পুরাতন কোন ব্যবস্থাকে। দীর্ঘদিন
ইংরেজ শাসনের শাসিত ভারতবাসী হারিয়েছে আত্মশক্তি। ইংরেজ প্রভুর কাছে দাসত্ব করে নিজেদেরকে
চির দাসে পরিণত করেছে ভারতবাসী।তাই স্বাধীনতার পরেও নীরদ চৌধুরী, সতীশ পাকড়াশিদের মতো
মুক্তিযোদ্ধা-যাদের জন্য দেশ মুক্ত হলো ,তারাই মুক্তি পায় না দেশের বন্দিশালা থেকে।
হয়তো বা এই কারণেই নেতাজি চির অন্তর্হিত। আত্মশক্তির এই দেউলেপনা আর ইংরেজ প্রভুর
কাছে মাথা বিকিয়ে দেয়ার কারণেই এ ব্যবস্থা আজও বহাল রয়ে গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top