“শিক্ষা একটি মিথস্ক্রিয়ামূলক
প্রক্রিয়া”- ব্যাখ্যা করো।
শিক্ষায় মিথস্ক্রিয়ার
অর্থ ; সাধারণ অর্থে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে মিথস্ক্রিয়া বলা হয়। তবে,
শিক্ষার ক্ষেত্রে মিথস্ক্রিয়া বলতে বােঝায়—শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বিদ্যালয়, পাঠক্রম,
সমাজ এবং পরিবেশের অন্যান উপাদানের মধ্যে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া।
·
মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুর শিখন
: শিশু ও পরিবেশের মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুর শিখন সম্পন্ন হয়। এর ফলে
শিশু ক্রমশ পরিণত হতে থাকে। তখন শিশুর মধ্যে সুপ্ত থাকা বৈশিষ্ট্যগুলিও সক্রিয় হয়ে
ওঠে।
·
আধুনিক শিক্ষায় মিথস্ক্রিয়ার গুরুত্ব
: আধুনিক শিক্ষার ক্ষেত্রে মিথস্ক্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শিক্ষার্থীকে নানাভাবে
সহায়তা করে থাকে—
(১) সংগতিবিধানে সহায়তা: মিথস্ক্রিয়া শিশুর
বা শিক্ষার্থীর সংগতিবিধানের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শিশু ধীরে
ধীরে পরিবেশের
বিভিন্ন শক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শেখে। পরিবেশের সঙ্গে সার্থকভাবে মানিয়ে নেওয়ার
ওপরেই শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধি নির্ভর করে।
(২) দৈহিক বিকাশে সহায়তা: মিথস্ক্রিয়া শিশুর
দৈহিক বিকাশেও সহায়তা করে। পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান যেমন জল, আলো, বাতাস শিশুর দেহের
বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, স্নায়ু প্রভৃতিকে সুগঠিত করে।
(৩) মানসিক বিকাশে সহায়তা: মিথস্ক্রিয়া শিশুর
মানসিক বিকাশে সহায়তা করে। পৃথিবীর চিরপরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে
গিয়ে শিশুর বুদ্ধি, চিন্তাশক্তি, আবেগ, অনুভূতি, স্মৃতি প্রভৃতি মানসিক ক্ষমতাগুলির
বিকাশ ঘটে।
(৪) প্রাক্ষোভিক বিকাশে সহায়তা: মিথস্ক্রিয়া
শিশুর প্রাক্ষোভিক বিকাশেও সহায়তা করে। সমাজ-পরিবেশে নিজের পরিবারের বিভিন্ন সদস্য,
বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী এদের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে করতে শিশুর মধ্যে প্রাক্ষোভিক
বিকাশ ঘটে।
(৫) চাহিদা পরিতৃপ্তিতে সহায়তা: মিথস্ক্রিয়া
শিশুর বিভিন্ন চাহিদা পরিতৃপ্তিতেও সহায়তা করে। আধুনিক শিক্ষা ব্যক্তির সার্বিক বিকাশের
কথা বলে। মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে শিশু তথা শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক, প্রাক্ষোভিক,
সামাজিক প্রভৃতি গুণের সার্থক ও সুষম বিকাশ ঘটে। সেইজন্যই শিক্ষাকে একটি মিথস্ক্রিয়ামূলক
প্রক্রিয়া বলে বিবেচনা করা যায়।