আধুনিক কাব্য সাহিত্যে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অবদান আলোচনা করো |

আধুনিক কাব্য সাহিত্যে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের
অবদান

 


>
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়

 ভূমিকা: রবীন্দ্রনাথ
ও নজরুলের অসামান্য জনপ্রিয়তা আর বুদ্ধদেব বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র, জীবনানন্দ দাশ
প্রমূখ কবিদের আধুনিক কবিতার উচ্ছ্বসিত তরঙ্গে যখন তরুণ কবি সমাজ ভাসমান তখন গ্রাম-গঞ্জ
নগরে পদাতিকের নিরন্তর চলমানতা নিয়ে বাংলা কাব্য জগতে আবির্ভূত হন “পদাতিক”
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১৯১৯-২০০৩) ।

 

➤ সাহিত্য পরিচয়:  তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “পদাতিক”(১৯৪০)
। এছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ গুলি হল- “অগ্নিকোণ”, “চিরকুট”,
“ফুল ফুটুক”, “যত দূরে যাই”, “কাল মধুমাস”, “এক
ভাই”, “ছেলে গেছে বনে”, “একটু পা চালিয়ে ভাই”, “জল
সইতে”, “বাঘ ডেকেছিল”, “যা রে কাগজের নৌকা”, “ধর্মের
কল” প্রভৃতি।

 

➤ কাব্য বৈশিষ্ট্য
ও অবদান:

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়
মার্কসীয় আদর্শে সমর্পিত প্রাণ, সাম্যবাদে বিশ্বাসী গণমুক্তিকামী কবি।

“আমাদের মিলিত অগ্রগতি/ একাকী চলতে চাই
না এরোপ্লেনে”

তিনি বিশ্বাস করতেন
সংগ্রাম ও বিপ্লবের মাধ্যমেই আসবে কাঙ্খিত মানব মুক্তি। তাই তার কবিতায় সমসাময়িক
জীবন ও ঘটনার সাথে সঙ্ঘবদ্ধ গণচেতনা ও বিপ্লবের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ লক্ষ্য করা যায়।

“পেট জ্বলছে, ক্ষেত জ্বলছে/ কে খাজনা
শুধবে?

হুজুর, এবার না বাঁচালে/ আগুন জ্বলে উঠবে”।    -(চিরকুট)

সুভাষ মুখোপাধ্যায়
সম্ভবত প্রথম বাঙালি কবি, যিনি প্রেম ও প্রকৃতিকে ছেড়ে কঠোর বাস্তবতা আর যুদ্ধ ঘোষণা
দিয়েই কবি জীবন শুরু করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে তিনি লিখলেন-

“প্রিয়
ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
      

                ধ্বংসের মুখোমুখি
আমরা”।

শুধু সাম্য বা মুক্তির
বাণী নয় তাঁর কবিতায় স্বদেশ ভাবনার প্রকাশ ও অনবদ্য।

“যে মাটিতে ভর দিয়ে আমি উঠে দাঁড়িয়েছি-
আমার দুহাতের / দশ আঙুলে / তার স্মৃতি”।
 (জননী -জন্মভূমি)

বাস্তববাদী কবি
হলেও বাস্তব জীবনের সাথে রোমান্টিকতাকে সম্পৃক্ত করে তিনি রোমান্টিক ভাব কল্পনার নতুন
তাৎপর্য এনেছেন।

ধনী শ্রেণীর শাসন-শোষণ,
অত্যাচারের বিরুদ্ধে কৃষক, শ্রমিক, মজুর শ্রেণীর মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ও শ্রেণীসংগ্রামের
চিত্র অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে চিত্রিত করে তিনি হয়ে উঠেছেন মানবতাবাদী।

আটপৌরে ভাষা ব্যবহার,
নিটোল ছন্দ, জীবনের টুকরো ছবি নির্মাণ, তির্যক বাকভঙ্গি, নিপুণ চরিত্র-চিত্রন প্রভৃতি
ক্ষেত্রে তাঁর দক্ষতা অসামান্য।

 

 উপসংহার:  সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রকৃতপক্ষে সাম্যের
কবি, বিদ্রোহের কবি, বিশ্বাসের কবি, মুক্তির কবি- এককথায় জীবনের কবি। মানবদরদী কবি
কৃষক শ্রমিক শ্রেণীর নির্যাতিত জীবনের রূপকার। বেদনাকে তিনি বহ্নিশিখায় রূপান্তরিত
করেছেন। তাঁর বক্তব্য সূর্যকরোদ্দীপ্ত দিনের মতোই স্বচ্ছ। চির চলমানতায় বিশ্বাসী তিনি
সত্যই পদাতিক।


✹ আধুনিক বাংলা কাব্যে মধুসূদন দত্তের অবদান আলোচনা করো

✹ বাংলা গানের ইতিহাসে নজরুল ইসলামের অবদান

✹ বাংলা গানের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথের অবদান

 বাংলা গানের ইতিহাসে রজনীকান্ত সেনের অবদান

✹ বাংলা গানের ইতিহাসে মান্না দের অবদান

✹ বাংলা গানের ইতিহাসে অতুলপ্রসাদ সেনের অবদান

✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান

✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

✹ বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজ এর অবদান

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top