“হঠাৎ একদিন ক্ষেপে উঠল কলের কলকাতা”- কলকাতাকে ‘কলের কলকাতা’ বলা হয়েছে কেন? তার ক্ষেপে ওঠার কারণ কি? PDF |

 হঠাৎএকদিন ক্ষেপে উঠল কলের কলকাতা– কলকাতাকে ‘কলের কলকাতা বলা হয়েছে কেন? তার ক্ষেপে
ওঠার কারণ কি? কলকাতা ক্ষেপে উঠেছিল কিভাবে? অথবা, ক্ষেপে ওঠার কাহিনীটি সংক্ষেপে বর্ণনা
করো। Class 12 Bangla Note With PDF.

 

 কলের কলকাতা

কলকাতাকে ‘কলের কলকাতা‘ বলার কারন-

  • লেখক
    সুভাষ মুখোপাধ্যায় তার “কলের কলকাতা” গল্পে যান্ত্রিক শহর কলকাতাকেই কলের
    কলকাতা বলেছেন।এখানে চলে অজস্র হাওয়া গাড়ি, চলে ট্রাম। কল খুললে জল পড়ে।কল টিপলে
    জ্বলে আলো। যন্ত্রের কারসাজিতে রাতদিন সব এক হয়ে যায়। এখানে আকাশ দেখা যায়না। নেই
    কোন অকৃত্রিম প্রকৃতির স্পর্শ। এখানকার মানুষগুলো যেন দম দেওয়া কলের পুতুলের মত ছুটে
    চলে সকালে। কিন্তু বিকেলে দম ফুরিয়ে যাওয়া পুতুলের মতই নিস্তেজ হয়ে পড়ে। প্রিয়
    শহর কলকাতা এভাবে যন্ত্র দ্বারা পরিচালিত এবং যান্ত্রিকতার অভিশাপে অভিশপ্ত।তাই লেখক
    কলকাতাকে “কলের কলকাতা” বলেছেন।

কলের কলকাতা ক্ষেপে ওঠার কারণ-

  • সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ “উড়ে এসে জুড়ে বসে” এই
    শহর কলকাতা তথা এদেশের বুকে। শুধু তাই নয় অমানবিক শাসন-শোষণ, অত্যাচারে জর্জরিত করে
    দেশ তথা শহরবাসীকে। সেই নৃশংস অত্যাচার শহরবাসীর মনে জাগিয়ে তোলে স্বদেশপ্রেম, বাড়িয়ে
    দেয় স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। তারা উদ্বুদ্ধ হয় জাতীয়তাবোধে। স্বাধীনতা হীনতায় কেউ
      বাঁচতে চায় না।তাই ইংরেজদের এই নারকীয় শাসন-শোষণ
    অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুমুক্ষু শহরবাসী তীব্র প্রতিবাদে সামিল হয়।সে সঙ্গত কারণেই ক্ষেপে
    ওঠে কলের কলকাতা

 কলকাতা ক্ষেপে উঠেছিল কিভাবে? অথবা, ক্ষেপে ওঠার কাহিনীটি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

  •    সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজের পাশব শাসনে কলকাতাবাসীর বঞ্চিত
    বুকে জমে ওঠে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ। তারই পরিণামে ক্ষেপে উঠে শহর কলকাতা। শহর জুড়ে শুরু
    হয় চাঞ্চল্য। গোলপুকুর, গোলদিঘি সহ রাস্তার মোড়ে মোড়ে চলতে থাকে মিটিং। স্কুল আর
    বিলাতি পণ্যের দোকানের সামনে শুরু হয় পিকেটিং। স্বাধীনতা লাভের উন্মাদনায় রাস্তায়
    জোয়ারের মতো ফুলে ফুলে ওঠে জনসমুদ্র। তাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা তীব্রতর হয়ে ওঠে।
    সারা শহর জুড়ে জ্বলে ওঠে আগুন। মোড়ে মোড়ে শুরু হয় বিলাতি বস্ত্র পোড়ানোর উৎসব।
    সবার মনে জাগ্রত হয় স্বদেশপ্রেম, স্বদেশীয়ানা।রোয়াকে
      বসে বৃদ্ধরা তকলি ঘুরিয়ে সুতো কাটে। মুখে মুখে ছড়িয়ে
    পড়ে আন্দোলনের খবর। এক অনাস্বাদিতপূর্ব উন্মাদনায় সবাই কিনে নেয় খদ্দরের টুপি। পুলিশের
    আগমন জানিয়ে দেওয়া হয় শঙ্খ বাজিয়ে।
  •   “বন্দেমাতরম” ধ্বনিতে
    কেঁপে
      ওঠে গোটা এলাকা। নির্ভয়ে
    কারাবরণ করেন ডিক্টেটর সহ দেশমাতৃকার বীর সন্তান ভলেন্টিয়ার এর দল। পুলিশ ভ্যানের
    পিছনে চলে
      রাগে ফুলে ওঠা বিশাল জনতা।
    সে ক্রুদ্ধ জনতার দিকে চেয়ে পুলিশও ভয় পেয়ে যায়।শাসক ইংরেজ সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করে।
    কিন্তু থেমে থাকেনা আন্দোলনের প্রচার। সাইক্লোস্টাইলে
      ছাপা হয় নিষিদ্ধ প্রচারপত্র। দেয়ালে দেয়ালে সেঁটে
    দেওয়া হয় কাল ও লাল কালিতে হাতে লেখা সংবাদপত্র।তাতে লেখা হয় পুলিশি অত্যাচার কে
    অগ্রাহ্য করে কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়ল আন্দোলনের আগুন। প্রাচীর পত্রের শেষে থাকা
    অনুরোধ মেনে কাগজ পেন্সিল নিয়ে সেসব খবর টুকে
      নেওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। কয়েদি গাড়ি ভর্তি হয়ে
    আসা স্বাধীনতা সংগ্রামী তে ভরে যায় জেলখানা। বন্দেমাতরম ধ্বনিতে
      কেঁপে ওঠে জেলখানার ইট ,কাঠ,পাথর। নেতাজি সুভাষচন্দ্র
    স্বয়ং কয়েদিদের আলিঙ্গন করে উদ্বুদ্ধ করেন। পুলিশকে ব্যঙ্গ করে বাচ্চারা চেঁচায়
    “বন্দেমাতারম”, লাল পাগড়ির মাথা গরম”। লেখক ও মনে মনে গেয়ে ওঠেন “ও
    তোর শিকল পরা ছল”। ইংরেজের বর্বোরোচিত অত্যাচারে এভাবেই ক্ষেপে ওঠে কলের কলকাতা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top