The purpose of education is adaptation |
‘শিক্ষার উদ্দেশ্য সংগতিবিধান বা অভিযোজন’—উক্তিটি সংক্ষেপে
ব্যাখ্যা করো
» শিক্ষার
উদ্দেশ্য—সংগতিবিধান বা অভিযোজন : শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল মানুষকে পরিবেশের সঙ্গে
অভিযােজন করতে বা মানিয়ে চলতে সাহায্য করা। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হরনি বলেছেন যে, শিক্ষাই
ব্যক্তিকে এক উচ্চশ্রেণির অভিযােজন ক্ষমতা দিয়েছে, যার সহায়তায় ব্যক্তি তার ভাবগত,
বুদ্ধিগত এবং অনুভূতিগত পরিবেশের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে সংগতিবিধান করে চলে। মানুষকে
মূলত তিন ধরনের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যবিধান করতে হয়। যথা-
(১) প্রাকৃতিক পরিবেশ : প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে
সঠিকভাবে সংগতিবিধানের ওপরই মানুষের অস্তিত্ব নির্ভর করে। এই প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে
মানিয়ে নিতে সাহায্য করে শিক্ষা। মানুষ তার জ্ঞান, বুদ্ধি ও দক্ষতার সাহায্যে বিভিন্ন
প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। একেই প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজন
বলে।
(২) সামাজিক পরিবেশ : মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজেই তার জন্ম, বৃদ্ধি ও বিকাশ।
সার্থকভাবে বেঁচে থাকতে হলে ব্যক্তিকে পরিবর্তনশীল সমাজের সঙ্গে মানিয়ে চলতে হয়।
তাকে সমাজের নানান রীতিনীতি, আচার-আচরণ, চিন্তাভাবনা, বিধিনিষেধ, অনুষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের
সঙ্গে অভিযোজন করতে হয়। এই ক্ষেত্রেও সাহায্য করে শিক্ষা।
(3) মানসিক পরিবেশ : শিক্ষার্থীকে নিজের মানসিক পরিবেশের সঙ্গেও সংগতিবিধান
করতে হয়। ব্যক্তি যদি তার মনােজগতের আশা-আকাঙ্ক্ষা, পছন্দ-অপছন্দ, কামনাবাসনা, বুদ্ধি-আবেগ
প্রভৃতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারে তাহলে সে সুক্ষ্ম ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
আর তা না পারলে সৃষ্টি হয় মানসিক জটিলতা এবং অন্তর্দ্বন্দ্ব। তাই মানসিক পরিবেশের
সঙ্গে সংগতিবিধানও শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। নানান শিক্ষালব্ধ অভিজ্ঞতা
ও কাজের মাধ্যমে মানুষ এইসব পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করে এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে
নেয়। তাই শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল পরিবেশের সঙ্গে সংগতিবিধান বা অভিযোজন।