আমাদের দেশে প্রচলিত
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন করেছিল ইংরেজরা। বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে
সহায়তার জন্য কিছু কেরানি তৈরি করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। ফলে পরীক্ষার পর পরীক্ষা পাস
এবং একটি শ্রেণীর পর অন্য শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়াই এই শিক্ষার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে
দাঁড়ায়। দেহ- মন ও আত্মার সঙ্গে তার কোনো যোগ গড়ে ওঠে নি। শিক্ষা যে মনের বিকাশ
ঘটায় এই শিক্ষায় সেই মন টাই থাকে উপবাসী। বাঙালি শিক্ষাবিদ রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দের
মতো কবি আইয়াপ্পা পানিকর ও এই প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আস্থাশীল ছিলেন না। শিক্ষাবীদ
বিবেকানন্দের ভাষায় -“Education is the manifestation of perfection already
in man” অর্থাৎ অন্তর্নিহিত গুণাবলীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশ সাধন হলো শিক্ষা।
“শিক্ষার সার্কাস” কবিতায় কবি বিবেকানন্দের সঙ্গে একমত। তাই প্রচলিত শিক্ষা
ব্যবস্থাকে তীব্র ব্যঙ্গ করে তিনি কবিতাটি রচনা করেছেন।শিক্ষাকে তুলনা করেছেন সার্কাস
এর সঙ্গে। সার্কাসে ট্রাপিজের খেলায় যেমন কুশলী খেলোয়াড় একটা দড়ি ছেড়ে আর একটা
দড়ি ধরে এবং এর মধ্য দিয়েই তার কুশলতার প্রকাশ ঘটে, সেখানে বুদ্ধির তেমন কোনো প্রয়োজন
হয় না। তেমনি ইংরেজ প্রবর্তিত এই শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীকে এক শ্রেণী পাস করে পরবর্তী
শ্রেণীতে যেতে শেখায়। পরের শ্রেণীতে উত্তরনের মধ্যেই সে খুঁজে পায় সার্থকতা।এভাবেই
শিক্ষা হয়ে ওঠে জীবনবিমুখ, হয়ে ওঠে চাকরি মুখাপেক্ষী। ফলে শিক্ষাকে আমরা বহন করে
চলি। কখনোই তার কাঁধে ভর করে জীবনের জটিল ও চড়াই উৎরাই পথ অতিক্রম করতে পারি না। এভাবে
মনের বিকাশের পরিবর্তে মনের অপমৃত্যুই
একমাত্র পরিণতি হয়ে ওঠে। কবির ভাষায়-
“জ্ঞান কোথায়
গেল?
সে যেখানে গেছে,
সেটা ধোঁকা”!
জীবনের শ্রেণি উত্তরণ তাই কখনো শেষ হয় না-
শেষ হবার নয়। শিক্ষার্থী অন্তহীন শ্রেণী উত্তরণের মধ্যে খুঁজে যায় সফলতা- গন্তব্যে
পৌঁছানো সম্ভব হয় না।
“যদি সব শ্রেণীর
শেষ হয়ে যায়,/আমি তবু পরের শ্রেণীতে যাব”। এভাবেই মানব সমাজের মধ্যে জমাট বাঁধা
সংকটকে মানবচেতনার ফোকাসে আনতে চেয়েছেন কবি। কবিতাটির মধ্যে কবির সমাজ মনস্কতা, মানবকল্যাণ,
প্রতিবাদী দৃঢ় মানসিকতা এবং শিক্ষাসংক্রান্ত মৌলিক মননের ঋজুতার প্রকাশ ঘটেছে।
- গুরু নাটকে সংগীত প্রয়োগের সার্থকতা দেখাও | গুরু নাটক- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
- নুন কবিতায় শ্রমজীবী মানুষের জীবন যন্ত্রণা।
- “নইলে ছন্দ মেলে না, ইতিহাসের পদটা খোঁড়া হয়েই থাকে”- ছন্দ কি? কী নইলে ছন্দ মেলে না? ইতিহাসের পদটা কিভাবে খোঁড়া হয়ে থাকে?
- “তারা বলে ভয় করে যে কর্তা”- কারা এ কথা বলে? তাদের কিসের ভয়? কর্তা জবাবে কি বলেন?
- “কর্তার ভূত” কি নিছক ভূতের গল্প নাকি রাজনৈতিক রুপককাহিনী আলোচনা করো
- গুরু নাটকে গুরুর স্বরূপ বিশ্লেষণ কর | গুরু নাটক একাদশ শ্রেণি বাংলা নোটস |
- সাধু ও চলিত ভাষার সংজ্ঞা | সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য আলোচনা করো |