ন্যায় এর নিয়ম গুলি কি কি? পঞ্চম অধ্যায়- মাধ্যম যুক্তি (নিরপেক্ষ ন্যায়) Note with PDF |

ন্যায়
এর নিয়ম গুলি কি কি
? ন্যায় এর ১০টি নিয়ম দৃষ্টান্তসহ বিস্তারিত আলোচনা।
 পঞ্চম অধ্যায়- মাধ্যম যুক্তি (নিরপেক্ষ ন্যায়) দ্বাদশ শ্রেণি।
ন্যায় এর নিয়ম গুলি কি কি? Note with PDF


ন্যায়ের নিয়মগুলি হল-

সাধারণ নিয়ম- ন্যায়ের  সাধারণ নিয়মগুলোকে আমরা তিনটি শ্রেণীতে
জানবো।

ক. গঠন সংক্রান্ত নিয়ম।
খ. বৈধতা সংক্রান্ত নিয়ম।
গ. অনুসিদ্ধান্ত নিয়ম।

 

ক. গঠন সংক্রান্ত নিয়ম (2 টি)

প্রথম নিয়ম- প্রত্যেক ন্যায়ে তিনটি বচন থাকবে। যার দুটি
আশ্রয় বাক্য এবং একটি সিদ্ধান্ত বচন হবে। যেমন-প্রধান আশ্রয় বাক্য, অপ্রধান আশ্রয়
বাক্য ও সিদ্ধান্ত বচন।

দ্বিতীয় নিয়ম- প্রত্যেক ন্যায়ে 3 টি পদ থাকবে। যথা- পক্ষ,সাধ্য
ও হেতু পদ। আবার এর প্রতিটি পদ একই অর্থে দুবার করে একটি ন্যায়ে
  মোট ছয়বার বসবে।

যেমন-  A-সকল ফুল হয় সুন্দর।

             A-গোলাপ হয় একটি
ফুল।

           A-গোলাপ হয় সুন্দর।

ব্যতিক্রম-  কিন্তু কোন ন্যায়ে তিনটির পরিবর্তে চারটি
পদ থাকলে সেক্ষেত্রে ন্যায়টি বৈধ নিয়ম লঙ্ঘন করে। যুক্তিটিতে “চারিপদ ঘটিত দোষ”
ঘটে।

যেমন-  
A- টেবিলটি হয় মেঝের উপর।

A-  
আমার হাত হয় টেবিলের উপর।

                A-আমার হাত হয় মেঝের
উপর।

 

    
উক্ত যুক্তিতে তিনটির পরিবর্তে চারটি পদ থাকায় যুক্তিটি ন্যায়ের বৈধ নিয়ম
লঙ্ঘন করেছে। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ হয়েছে। এর চারটি পদ হলো- আমার হাত, মেঝের উপর, টেবিল,
টেবিলের ওপর।

খ. বৈধতা সংক্রান্ত নিয়ম (5 টি)-

তৃতীয় নিয়ম- প্রত্যেক ন্যায়ে হেতু পদকে দুটি আশ্রয় বাক্যের
মধ্যে যেকোনো একটি আশ্রয় বাক্যে অন্তত একবার ব্যপ্য হতে
  হবে।

যেমন-  
A- সকল M হয় P

               A- সকল S হয় P

             A- সকল S হয় P

 

     উক্ত ন্যায়ে হেতু
পদ প্রধান আশ্রয় বাক্য A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় পদটি ব্যপ্য হয়ে ন্যায়ের
বৈধ নিয়ম মেনে বৈধতার দিকে এগিয়ে চলেছে।

ব্যতিক্রম- কিন্তু
কোন ন্যায়ে হেতু পদ দুটি আশ্রয় বাক্যের কোনোটিতে একবারও ব্যাপ্য
  না হলে ন্যায়টি বৈধ নিয়ম লঙ্ঘন করে এবং
যুক্তিটিতে অব্যাপ্য
  হেতু দোষ ঘটে।

 যেমন-   A- সকল P হয় M

A-  
সকল S হয় M

              A- সকল S হয় P

 

      উক্ত ন্যায়টিতে
হেতু পদ দুটি আশ্রয় বাক্য A বচনের
  বিধেয় স্থানে থাকায়
পদটি ব্যাপ্য না হয়ে ন্যায়ের বৈধ নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এবং ন্যায়টিতে “অব্যপ্য
হেতু দোষ” ঘটেছে।

চতুর্থ নিয়ম- যে পদ আশ্রয় বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে
ব্যাপ্য হতে পারবে
  না। অর্থাৎ সিদ্ধান্তে
কোন পদকে ব্যাপ্য হতে গেলে তাকে আগে অবশ্যই আশ্রয় বাক্যে ব্যপ্য হতে
  হবে।

যেমন-  A-
সকল M হয় P

A-  
সকল S হয় M

উক্ত যুক্তিতে হেতু
পদ প্রধান আশ্রয় বাক্য A বচনে উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় এটি ব্যাপ্য
  হয়েছে। এছাড়া সিদ্ধান্ত  A বচনে উদ্দেশ্যে পক্ষ পদটি  ব্যপ্য হয়েছে।দেখা যায়,এই পক্ষ পদটি পক্ষ
আশ্রয় বাক্য A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় এটি ব্যাপ্য হয়ে ন্যায়ের বৈধ নিয়ম
মেনেছে।তাই যুক্তিটি বৈধ হয়েছে। এর বৈধ মূর্তির নাম BARBARA

ব্যতিক্রম- 

    i. অবৈধ পক্ষ দোষ:  কিন্তু কোনো ন্যায়ে সিদ্ধান্তের ব্যাপ্য
পদটি
  আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য  না হলে সেক্ষেত্রে ন্যায়টি  অবৈধ হবে এবং যুক্তিটিতে অবৈধ পক্ষ বা অবৈধ
সাধ্য দোষ
  ঘটবে।

যেমন-  A-
সকল M হয় P

A-  
সকল M হয় S

            A- সকল S হয় P

 

      উক্ত যুক্তিতে হেতু
পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য হলেও এর পক্ষ পদটি পক্ষ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য
  না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হয়ে ন্যায়ের
বৈধ নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। তাই ন্যায়টিতে
  “অবৈধ পক্ষ
দোষ” ঘটেছে বলা যায়।

   ii. অবৈধ সাধ্য দোষ-
যখন কোন ন্যায়ে সাধ্য পদটি সাধ্য
  আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য
না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হলে
  সেক্ষেত্রে ন্যায়টিতে  ন্যায়ের নিয়ম লঙ্ঘন জনিত যে দোষ ঘটে তাকে
“অবৈধ সাধ্য দোষ”
  বলে।

যেমন- 
A- সকল M হয় P

           E- কোন S নয় M

         
 
E- কোন S নয় P

      
 উক্ত যুক্তিতে হেতু আশ্রয়বাক্যে ব্যপ্য হয়েছে। এছাড়া
পক্ষ পদটিও পক্ষ আশ্রয়বাক্যে
 E বচনের উদ্দেশ্য
স্থানে থাকায় সেটি ব্যপ্য হয়েছে। কিন্তু সাধ্য পদটি সাধ্য আশ্রয় বাক্য
 A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় সেটি ব্যাপ্য না হয়ে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হওয়ায় ন্যায়ের
বৈধ নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। তাই যুক্তিটিতে “অবৈধ সাধ্য দোষ” ঘটেছে বলা যায়।

পঞ্চম নিয়ম- ন্যায়ের দুটি আশ্রয় বাক্য সদর্থক হলে সিদ্ধান্তটি
অবশ্যই সদর্থক হবে। এর সদর্থক দুটি বচন হল A এবং I বচন, এখন দুটি সদর্থক আশ্রয় বাক্য
রূপে যুক্তি সাজালে দেখা যায়-

        A  
   I       A      I

        A      I       I       A

      A/I   ∴ X      I        ∴ I

 

ষষ্ঠ নিয়ম- ন্যায়ের দুটি আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে কোন বৈধ সিদ্ধান্ত
নিঃসৃত হয় না, যেমন দুটি নঞর্থক বচন হলো E এবং O

যেমন-

        E   O  
E   O

        E   O  
O   E

        X   X  
X   X

ব্যাতিক্রম- কিন্তু
কোনো ন্যায়ের দুটি আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে যুক্তিটি অবৈধ হয়, যুক্তিতে দুটি নঞর্থক
আশ্রয়বাক্য জনিত দোষ দেখা যায়। যেমন- E

                     E

                  
E

সপ্তম নিয়ম- ন্যায়ের একটি আশ্রয় বাক্য নঞর্থক হলে সিদ্ধান্তটি
অবশ্যই নঞর্থক হবে। যেমন- A এবং I হল সদর্থক বচন এবং E এবং O হল নঞর্থক বচন।

        A    E     A  
O   I    E    I    O

        E    A     O   A  
E    I    O    I

     
∴ E  
∴E/O  ∴O  ∴O   ∴X   ∴O  ∴X   ∴X

       

গ. অনুসিদ্ধান্ত নিয়ম (৩ টি)

অষ্টম নিয়ম- ন্যায়ের দুটি আশ্রয় বাক্য বিশেষ বচন হলে তা থেকে
কোন বৈধ সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় না।

যেমন- I, O

        I       O      I       O

        I       O      O      I

        X      X      X      X

 

ব্যাতিক্রম- কোন
যুক্তির দুটি আশ্রয় বাক্য বিশেষ বচন হলে যুক্তিটি অবৈধ হয় এবং বিশেষ আশ্রয় বাক্য
জনিত দোষ দেখা যায়।

        M­—P

        S—M

        S—P

নবম নিয়ম- ন্যায়ের একটি আশ্রয় বাক্য বিশেষ বচন হলে সিদ্ধান্তটি
অবশ্যই বিশেষ বচন হবে।

যেমন-

সামান্য বচন  I, E

বিশেষ বচন  I, O

 A 
I  A  O 
E  I  E  O

 I 
A  O  A 
I  E  O  E

 I 
I  O  O 
O  X  X  X

দশম নিয়ম- ন্যায়ের প্রধান আশ্রয় বাক্য বিশেষ এবং অপ্রধান
আশ্রয় বাক্য নঞর্থক হলে কোন বৈধ সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় না।

বিশেষ বচন  I, O

নঞর্থক বচন  E, O

    
উক্ত যুক্তিতে তিনটি বচন আছে। তিনটি পথ একই অর্থে দুবার করে বসেছে। এছাড়া হেতু
পদ প্রদান আশ্রয়বাক্যে ব্যপ্য হয়ে বৈধ নিয়ম মেনেছে। কিন্তু আমরা জানি, ন্যায়ের সিদ্ধান্ত
কোন পদকে ব্যপ্য হতে গেলে তাকে আশ্রয়বাক্যে অবশ্যই একবার ব্যপ্য হতে হবে। উক্ত যুক্তির
সিদ্ধান্ত ‘O’ বচনে বিধেয় পদ রূপে সাধ্যপদ ব্যপ্য হয়েছে। কিন্তু এটি সাধ্য আশ্রয়বাক্যে
ব্যপ্য না হয়ে ন্যায়ের বৈধ নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। তাই এই যুক্তিটিতে ‘অবৈধ সাধ্য দোষ’
ঘটেছে বলা যায়।



Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now
Scroll to Top